২০১৬ সালের ৫ জুন বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামে নগরীর জিইসি এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম (মিতু)। আর ওই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় একপর্যায়ে গ্রেফতার হয়েছেন ভিকটিমের স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। এরপর তিনি চাকরিচ্যূত হয়েছেন। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সাবেক এই পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার কারাবন্দি রয়েছেন।
অবশেষে গত ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। হাইকোর্টের ওই জামিন মঞ্জুরের বিরুদ্ধে করা আবেদন আমলে নেয়নি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে হাইকোর্টের জামনি বহল রয়েছে এবং কারামুক্তিতে বাবুল আক্তারের বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বাবুল আক্তারকে জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বাবুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার। পরে ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন জামিন নামঞ্জুর করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি এলাকায় ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্তে বাবুল আক্তার সেই মামলায় আসামি হন। গত ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বাবুল আক্তারকে জামিন দেন।
বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেদিনও আদালতে বাবুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। পরে বাবুল আক্তারের জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন তার শ্বশুর।
সেদিন আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বাবুল আক্তার তিন বছর ৭ মাস ধরে কারাগারে আছেন, এই বিবেচনায় আদালত তাকে ৬ মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। একইসঙ্গে বাবুল আক্তারকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এর আগে মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত এ আদেশ দেন।
বাবুল আক্তারের সঙ্গে অভিযোগপত্রভুক্ত অপর ছয় আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। তাদের মধ্যে বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। এহতেশামুল জামিনে, কামরুল শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালু শুরু থেকে পলাতক।
আ. দৈ. /কাশেম