রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর-১১ এর রহমত ক্যাম্পের বসবাসকারী বিহারীরা পানির দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ তারা পানির কষ্টে আছেন। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দপ্তরের লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েও তারা কোন সুফল পাচ্ছেন না।
অবশেষে আজ শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে পানির দাবিতে মিছিল নিয়ে উর্দুভাষী বিহারী জনগোষ্ঠীর বিপুল সংখ্যক লোকজন কালশী রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছেন। রাস্তা অবরোধকালে পুরো কালশিএলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে ডিএমপির পল্লবী থানার ওসির অনুরোধে বিহারী নেতৃবৃন্দ রাস্তার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেন।
এদিকে গতকাল উর্দুভাষীদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশী বিহারী পূণর্বাসন সংসদের (বিবিআরএ) পল্লবী থানা শাখার উদ্যোগে পানির দাবিতে এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেছেন বিবিআরএ’এর রহমত ক্যাম্প’র সভাপতি নান্নু মহাজন। কালশি রাস্তা অবরোধ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি বিবিআরএ’এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক নেয়াজ আহমদ খান। তিনি বিহারী ক্যাম্পে নিরবিচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহে ব্যর্থতার জন্য ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ওয়াসার অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে রাজধানীবাসী পানি কষ্টের শিকার।
তিনি আরো বলেন, পুনর্বাসনে ওয়াদা করে সরকার গত ৫৪ বছর যাবৎ বিহারিদেরকে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দেশের সরকার ও জনগণ উর্দুভাষী বিহারী মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকলেও ‘ডেসকো ও ওয়াসা’ কর্তৃপক্ষ অনেকটাই বর্ণবাদী আচরণ করছে।
বিহারী নেতা নেয়াজ সরকারকে দ্রুত ‘ওয়াসা ও ডেসকোর’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি সরকার প্রধান নিকট জানতে চেয়েছেন যে মিরপুর ১০,১১ ও ১২ নম্বরের আবাসিক এলাকায় পানি থাকলেও বিহারী ক্যাম্পে পানির লাইন ও পানি সরবরাহ বিঘ্নিত কেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যে ক্যাম্পে পানির সর্বাহাহ বন্ধ করে পানি-বাণিজ্য করছে গুটিকতক অসাধার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি তাদের শাস্তি দাবি করেন ও অনতিবিলম্বে পল্লবীর সকল বিহারী ক্যাম্পে পানি সরবরাহের দাবি জানান।
বিবিআরএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও অবরোধ কর্মসূচির বিশেষ অতিথি কাওসার পারভেজ ভুলু বলেন,ওয়াসার লোকজন দালাল ও মাস্তান নিয়োগ করে বহারিদের নিকট হতে পানির বিনিময়ে টাকা তুলছেন, অভিযোগ দিলেও জোনাল কর্মকর্তা অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না।
বিহারী নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে সরকারকে অবিলম্বে পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে তারা পানির কষ্ট সহ মানবতার জীবন যাপনের চিত্র তুলে ধরেছেন। বিহারীদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস কেন নীরব রয়েছেন তা বিহারী নেতৃবৃন্দ জানতে চেয়েছেন। কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন বিহারী নেতা ওসমান গনি মহাজন, মোহাম্মদ সাব্বির, আলাউদ্দিন, আসমা বেগম, রিয়াজউদ্দিন মুকুল, শামসুদ্দিন মুন্না আনিসুর রহমান বেচু,আরমান দিল্লিওয়ালা,মোঃ সনু,হাসিনা বেগম প্রমুখ।
আ. দৈ. /কাশেম