দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, সরকারি চাকুরিজীবীদের কাজ না করে কোন উপায় নেই। যারা চাকরি করেন, তারা বেতন নিবেন অথচ কাজ করবেন না, এমনটা হতে পারে না। সরকারি চাকুরিজীবীদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) বগুড়ায় জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সভাপতিত্বে ’শহীদ টিটু মিলনায়তন দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন,দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো: আক্তার হোসেন,বগুড়া পুলিশ সুপার মো: জেদান আল মুসা। অনুষ্ঠানে দুদকের বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীর পরিচালক মো: ফজলুল হক স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন,ঘুষ না দেওয়ার ব্যাপারে সবাই সচেতন হতে হবে। বগুড়া যেন শ্রেষ্ঠ জেলা হিসেবে দুর্নীতি দমনে সবার উপরে থাকে তা নিশিত করতে হবে।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।
প্রাপ্তিতে হয়রানীর শিকার বা সেবা বঞ্চিত সংক্ষুব্ধ জনসাধারণ তাদের অভিযোগসমূহ বগুড়া জেলার সকল সরকারি দপ্তর প্রধানদের উপস্থিতিতে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। মোট ৯৭ টি অভিযোগের মধ্যে দুদকের তফসিল ভুক্ত ৫৭ টি অভিযোগের শুনানি হয়। যার মধ্যে ২ টি অভিযোগ অনুসন্ধানে নেয়া হয় এবং ১টি অভিযোগের বিষয়ে ২ জন কে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। বাকি অভিযোগসমূহ প্রতিবেদন দাখিল সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, আজ রোববার বগুড়ায় গণশুনানিতে ভিকটিমের অভিযোগ গ্রহণ না করায় তিনি অনুষ্ঠানে হৈচৈ শুরু করেন। এক পর্যায়ে দুদক চেয়ারম্যানের দিকে ঢিল নিক্ষেপ করেছেন বলে খবর পাওয়া যায়। কিন্তু তার ঢিলটি অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
ওই ব্যক্তির নাম ছাকোয়াত হোসেন মণ্ডল। তিনি মৎস্যচাষি। দীর্ঘদিন বিভিন্ন জায়গায় প্রতারিত হয়ে প্রতিকার না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাপ্রধানের দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি। শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি বগুড়ায় দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগ জমা দিতে যান। কিন্তু সেখানেও তার অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি।
গণশুনানি চলাকালে ছাকোয়াত হোসেন হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ঢিল নিক্ষেপ করেন। ঘটনার পরপর উপস্থিত কর্মকর্তারা তাকে সরিয়ে দেন। ঢিল নিক্ষেপের কারণ জানতে চাইলে ছাকোয়াত সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও বিচার পাইনি। মানবাধিকার কমিশন দুইবার আমার পক্ষে রায় দিলেও কোনো কাজ হয়নি। দুদকের এ অনুষ্ঠানে শুধু সদর থানার অভিযোগ নিচ্ছে, আমারটা নিচ্ছে না। এ আক্ষেপেই আমি ঢিল নিক্ষেপ করেছি। এতে যদি আমার জেল হয়, আমি জেলে যেতেও প্রস্তুত।’এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এব্যাপারে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজীর আহমেদ বলেন, ছাকোয়াত হোসেন মণ্ডলের অভিযোগটি দুদকের সিডিউল ভুক্ত অপরাধে পড়ে না। তাই তার অভিযোগটি দুদক আমলে নিতে পারেনি। ফলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে হট্টোগোলের চেষ্টা করেন।
আ. দৈ./কাশেম