২০১৪ সালে রাজধানীর গুলশানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে অবরোধের ঘটনায় ডিএমপি গুলশান থানায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনাসহ ১১৩ জনকে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ট্রাক রাখা ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও নাগরিক অধিকার হরণের অফরাধে এই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শরিফুল ইসলাম শাওন এই মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই সময় পেপার স্প্রে প্রয়োগ করে খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মামলার আবেদনে বলা হয়, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অবৈধ আওয়ামী সরকার অবৈধ নির্বাচন কমিশন দ্বারা সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষে বিএনপি আন্দোলন শুরু করে।
আন্দোলনের রূপরেখা হিসেবে ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ মার্চ অব ডেমোক্রেসি বিএনপি সমাবেশের ডাক দেন। মার্চ অব ডেমোক্রেসি সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অংশগ্রহণ করলে হাজার হাজার জনতা তার আগমন উপলক্ষ্যে বাসা থেকে বের হওয়ার উদ্যোগ নিলে ওই বাড়ির সামনে বালির ট্রাক রেখে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।
এর আগেই ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে বালু ভর্তি ৫/৬ টি ট্রাক বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজা বাসভবনের গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রেখে উল্লেখিত আসামীরা রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান-২ এর ফিরোজা বাসভবন এর গেট বন্ধ করে দেয়। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অন্যায়ভাবে আসামীরা রাস্তার উপরে অবৈধভাবে আন্তর্ঘাতকমূলক কার্যক্রম করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জনসাধারনের চলাচলের ও বেগম খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সেজন্য রাস্তার উপরে ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্র অধিকারকে হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
মামলায় আসামী করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এসবির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি মোঃ ইকবাল বাহার, ডিএমপির সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ডিআইজি মীর রেজাউল আলম, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার লুৎফুল কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি আয়েশা সিদ্দীকা, সাবেক ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম, গুলশান জোনের সাবেক এসি মোঃ নুরুল আলম, তৎকালীন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, এম এ কাদের খান (সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ), গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান হোসেন, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জসিম উদ্দিন, বশির আহমেদ (সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীলীগ) ফরটিস গ্রুপ ও সারা এন্ড রিসোর্টের মালিক শাহাদাত হোসেন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাসির ওরফে কালা নাছির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গির আলম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, ৪২ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর আইয়ুব আনসার মিন্টু, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ঢালী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম বাসেক, বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক কাওসার আহম্মেদ ওরফে গলাকাটা কাওসার, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মহারাজ, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সহ-সম্পাদক কেন্দ্রীয় উপকমিটি আওয়ামী লীগ সাজ্জাদ হোসেনসহ ৯৯ জন।
আ. দৈ. /কাশেম/ এসএস