রাজধানীতে স্বল্প আয়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠী ‘হরিজন সম্প্রদায়ের’ লোকজন মানবেতন জীবন যাপন করছেন। নগরীতে পরিচ্ছন্নতা কাজ ছাড়া অন্য কোন পেশায় তারা কাজ করেন না বললেই চলে। রাজধানীর পুরান ঢাকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তারা সীমিত পরিসরে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করেন। তাদের আবাসস্থলে খাবার পানির সংকট অনেক বেশি। একই সাথে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যাও রয়েছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার ( ২৪ জুন) গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভনের সামনে নানা শ্লোগান ও দাবি সম্বলিত ব্যানার, ফ্যাস্টুন নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ‘হরিজন সম্প্রদায়ের’ লোকজন। কারণ বাংলাদেশে বিভিন্ন সম্প্রায়ের লোকজনের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ও নানা বৈষম্যের শিকার এই সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ ও শিশুরা। তাদের সন্তানরা পড়াশোনার দিকে থেকে অনেক পিছিয়ে আছেন। ফলে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তারা চাকরিতে তেমন সুযোগ পাচ্ছেন না।
অবশেষে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আউটসোসিং এ পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে ‘স্যানিটেশন পদে’ লোকজন নিয়োগের দাবি জানান। শুধু তাইনয়, বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘স্যানিটেশন পদে’ তাদেরকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার দাবি জানান। তারা মানুষ হিসেবে কাজ করে বাঁচতে চায়। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ ‘স্যানিটেশন পদে’ নিয়োগের উদ্যোগ নিলে হরিজন সম্প্রদায়ের নারী ও পুরুষরা আবেদন করে চাকরির সুযোগ পেতে পারেন। এমনটাই তাদের প্রত্যাশা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিন দিন তাদের পেশা এবং বাসস্থান সংকোচিত হয়ে আসছে। এক সময় ঢাকা সিটি করপোরেশনে ময়লা আর্বজনা তারাই পরিস্কার করতেন। ওই সময় থেকেই তারা ঢাকায় সুইপাড় হিসেবেই পরিচিত পেয়েছেন। তখন সিটি করপোরেশনে ময়লা আর্বজনা পরিস্কারের চাকরিতে মুসলমান ও শিক্ষিত লোকজন আসতেন না। আর এই দপ্তরটাকে সুইপাড়ের দপ্তর হিসেবে মনে করা হতো। পরে এই দপ্তরের নাম পরিবর্তন হয়ে পরিচ্ছন্নতা বিভাগ এবং বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ হয়েছে।
এখন শিক্ষিত লোকজন যোগ্যতা অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিচ্ছন্ন কর্মী (ক্লিনার) ও কর্মকর্তা পদে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করেন। তবে বর্তমানে অনেকে চেষ্টা ও তদবির করেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে চাকরির সুযোগ পান না। তবে সিটি করপোরেশনে আউটসোসিং এ পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ করায় চাকরির সুযোগ দিন দিন কমছে।
আ. দৈ./কাশেম