রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) হিমঘরে রাখা একটি মরদেহ থেকে দুই চোখ গায়েব হয়ে গেছে। স্বজন ও পরিবারের দাবি, ওই মরদেহের দুই চোখ তুলে নেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা বলছেন, মর্গে রাখা মরদেহের দুই চোখ খেয়ে ফেলেছে ইঁদুর।
ওই মরদেহটি রংপর নগরীর বুড়ির হাট বাহারদুর সিংহ জিপের পার গ্রামের নাসিম উদ্দিনের ছেলে মাসুম মিয়ার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুর নগরজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে মরদেহ থেকে চোখ উধাও হওয়ার বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি রমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবার, পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে ধানকাটাকে কেন্দ্র করে শ্যালক সায়েদুরের সঙ্গে মাসুম মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সায়েদুরের লোকজন মাসুম মিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যদের দেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত মাসুমকে রমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে নিহতের মেয়ে মারুফা বেগম বাদী হয়ে সায়েদুরসহ তিনজনকে আসামি করে পরশুরাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হিমঘরে রেখে দেয়। বুধবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হিমঘর থেকে বের করা হলে দেখা যায় মরদেহের দুটি চোখ নেই। এ নিয়ে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
নিহতের প্রতিবেশি আব্দুল জলিল জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঔষুধ চুরি হয় শুনেছি। এখন মরদেহের চোখও চুরি হলো। এখানে মরদেহ রাখাও নিরাপদ নয়। চোখ চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সর্দার রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালের হিমঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। লাশের দুটি চোখ খেয়ে ফেলেছে ইদুর।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক ইসলাম বলেন, হিমঘরে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। প্রায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাহিরে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
একইভাবে হাসপাতালের উপ-পরিচালককে একাধিকবার ফোন করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে সকালে মরদেহটি দেখতে গিয়েছিলাম। লাশের চোখ ছিলনা। কি কারণে লাশের চোখ ছিলনা, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তাছাড়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে ।