জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারের আশুলিয়ায় কয়েকজন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে স্মরণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এমন একটা জাতি, আমরা আমাদের নিজেদের সন্তানদের পুড়িয়ে মারি।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দারুল ইহসান মাদরাসার মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপির আয়োজিত জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করে, আমরা এমন একটা জাতি, আমাদের নিজেদের ছেলেদের পুড়িয়ে মারি। আমরা এমন একটা জাতি, রাষ্ট্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী তারা সন্তানদেরকে হত্যা করে, এমনকী পুড়িয়ে হত্যা করে।’
৫ আগস্ট পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন বেঁচে ছিলেন। সেই হত্যায় তাদেরকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে...(একজন) শহীদের পরিবার অভিযোগ করেছে, তার স্বামীকে পুড়িয়ে মারার পরে তাকে কেউ খোঁজ নেয়নি, কেউ সহযোগিতা করেনি। আমি ঢাকা ডিসিকে এখানে বসেই ফোন করেছিলাম। সরকার অঙ্গীকার করেছিলেন আহত এবং শহীদের পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দেবে। যারা আহত হয়েছিলেন তাদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করবে। আমি এখানে মাত্র দুজনকে পেয়েছি যারা সেই টাকাটা পেয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে, জনগণের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ভয়াবহ দানবের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। এখনো কিন্তু আমরা সেই গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারিনি, যে গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘মূল কথা হলো হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচার কিন্তু এখনো দৃশ্যমান হয়নি। এখনো আমরা দেখছি, শহীদ পরিবার ন্যূনতম যতটুকু সহযোগিতা পাওয়া দরকার ছিল সেটুকু তারা পাইনি। এখনো দেখছি যারা পঙ্গু এবং আহত হয়েছিলেন, তাদের চিকিৎসা চূড়ান্ত হয়নি। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনাদের যে মেশিনারি আছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছেন; তারা এই খবরগুলো নিয়ে যেন সহায়তা করেন।’
‘আজকে অনেক কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক মতানুবাদ হচ্ছে। এটা হবেই, গণতন্ত্রে সেটা স্বাভাবিক’—মন্তব্য করে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এমন কোনো কিছু করবেন না যাতে আবার গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের সেটাই আহ্বান থাকবে। আমাদের আহ্বান থাকবে, ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না, যাতে আবার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সুযোগ পায় দেশে ফিরে আসার।’
এসময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবুসহ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা জেলা ও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।