ব্যাংকের অনিয়ম দুর্নীতি ও জুলাই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত থাকায় বাংলাদেশ কর্মাস ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে অপসারণ করেছে পর্ষদ। গত ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে এমডি ও সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন। এর আগে তিনি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এমডি ও সিইও পদে কর্মরত ছিলেন।
কমার্স ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার তিনি নিজেই ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করে চলে গেছেন। তার আগে গতকাল তাকে অপসারণের সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি যোগদান করার পরেই অর্থের বিনিময় ইচ্ছা মতো বদলি করেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। মোশারফ হোসেন আওয়ামী লীগ দোসর ছিলেন। বিমানবন্দর থানায় তার বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের ছাত্র হত্যার মামলা রয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে এমডি ও সিইও হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরে এস আলমের হয়ে কাজ করছিলেন। এস আলম যেভাবে নির্দেশা দিচ্ছেন, ঠিক সেইভাবেই কাজ করতেন তিনি। পর্ষদের কোনো কথায় তিনি শুনতেন না। ব্যাংকের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে বর্তমান পর্ষদ তাকে ব্যাংক থেকে অপসারণ করেছেন।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এস আলম গ্রুপের দখলে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয়। নতুন পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউল রহমান, মেঘনা ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহসিন মিয়া, চার্টার্ড একাউন্টেট শেখ আশ্বফুজ্জামান। এছাড়া দুজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তারা হলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ; যিনি বর্তমানে সরকারের প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে আছেন এবং জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো গোলাম মরতুজা; যিনি জনতা ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ।
কমার্স ব্যাংকের ৫১ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার সরকারি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৬ সাল থেকে এ ব্যাংকের পুরো নিয়ন্ত্রণ বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের হাতে ছিল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকও নিয়োগ দেয় এই গ্রুপ।
তাদের মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আটকা পড়েছে ব্যাংকটির ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এদিকে কমার্স ব্যাংক থেকে কৌশলে অন্য ব্যাংকে টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি এস আলম গ্রুপ। তারা ব্যাংকটিতে প্রায় ৬০০ জনবলও নিয়োগ দিয়েছে। এর বেশির ভাগই গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার। সার্বিকভাবে আধা সরকারি এই ব্যাংকের কার্যক্রম থমকে আছে।