তদবির, টেন্ডার বাণিজ্য, ঘুষ ও দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী ও বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার (২১ মে) এই তিনজনকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, আজ সকাল ১০টায় হাজির হয়েছেন মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী ও বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে দুদকে হাজির হন এনসিপি’র সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া গাজী সালাউদ্দিন তানভীর। তবে গত মঙ্গলবার তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসানের হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তারা ওইদিন আসেননি। আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসেছেন। আর গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে গতকাল বুধবার হাজির হতে বলা হলে, তিনি যথা সময় দুদক আসেন। তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলেন, তলবি নোটিশ প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পর্ক অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে গতকাল মঙ্গলবা হাজির না হলেও, আজ বুধবার হাজির হয়েছে।
গাজী তানভীর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন:
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন। যদি এ অভিযোগ প্রমাণ হয় তো আমি জেলে যেতে রাজি আছি।আজ বুধবার (২১ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গণমাধ্যমে এমন দাবি করেন তিনি। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আজ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এনসিপির সাবেক নেতা গাজী সালাউদ্দিন তানভীর বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন। এ কারণে আমাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় হতে হয়েছে। এ বিষয়ে যাথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে এসেছে ১১০ কোটি টাকার কাগজে ৪০০ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়- এটা হয় কীভাবে! কিছুদিন আগেও ২৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়টি এসেছে। যে কোনো অ্যাঙ্গেলে এর হিসাব খতিয়ে দেখা উচিত। এর সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। এছাড়া ৬৪ জেলায় ডিসি নিয়োগ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। এরপরও যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তাহলে তাকে তো মহাশক্তিশালী হতে হবে।
এনসিপির সাবেক এ নেতা এবং দুই উপদেষ্টার পিও, এপিএসের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৫ মে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এর আগে ২১ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। চলতি বছরে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে তার নাম উঠে আসে।
আ. দৈ./কাশেম