গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার হারিকেন এলাকায় ট্রাকচাপায় এক নারী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।নিহত শ্রমিকের নাম মোসা চম্পা বেগম (১৮)। তিনি নেত্রকোনা জেলার হারারকান্দি গ্রামের মো. কাউসারের স্ত্রী। তিনি স্থানীয় ইন্টার লোপ পোশাক কারখানায় সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে কারখানায় যাচ্ছিলেন ওই নারী শ্রমিক। হারিকেন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি অজ্ঞাত ট্রাক তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার খবরে সহকর্মী ও স্থানীয় শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে আসেন। তারা হারিকেন এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এতে উভয়মুখী সড়কে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে ময়মনসিংহের ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল। বহু যাত্রী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
খবর পেয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, “সকাল ৮টার দিকে এক নারী শ্রমিক ট্রাকচাপায় মারা যান। এর পরপরই শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে নেমে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
নিহত শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ট্রাকটির সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। স্থানীয় শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেছেন, শিল্প এলাকায় যান চলাচলের ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফুটওভার ব্রিজ, স্পিডব্রেকার বা সিগন্যাল ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আ. দৈ./ কাশেম