গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের মেইনটেইনেন্স কাজ সহ রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, কোটি টাকা লোটপাট এবং রাস্তার বাতির বরাদ্দকরা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে উক্ত সংস্থার গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিমের কর্মকর্তারা সরেজমিন বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালিয়েছেন। অভিযানকালে দুদকের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছেন এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তথ্য উপাত্ত সংগ্রহণ করেন। দুদক কর্মকতারা প্রপ্ত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিমের নেতৃত্বে ছিলেন, সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, সহকারী পরিচালক মো: সোহরাব হোসেন সোহেল ও উপসহকারী পরিচালক মো: আল-আমিন হোসেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্র্মকর্তা ও সগকারী পরিচালক তানজীর আহমেদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুদকের অভিযানে দেখা যায়, গোপালগঞ্জে জেলার প্রবেশ পথে পুলিশ লাইন্সের আগে হরিদাসপুর ব্রীজের নিম্নমানের লাইট স্থাপনের পর পরই নষ্ট রয়েছে। লাইটগুলো ঠিক না করায় চুরি ডাকাতিসহ নানা অনিয়ম হচ্ছে মর্মে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে। সন্ধ্যার পর সেখান দিয়ে সাধারন জনগণ হেটে যেতে পারেননা ফলে জন দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়ক ও ব্রীজের মেরামত খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় সাধারন জনগণ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন মর্মে জানা গেছে।
এছাড়া গোপালগঞ্জ থেকে নড়াইল যাওয়ার পথে চাপাইল ব্রীজের নিম্নমানের লাইটসমূহ দীর্ঘদিন নষ্ট হলেও মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আশে পাশের গ্রামের মানুষ সন্ধ্যার পর উক্ত ব্রিজ দিয়ে পারাপারে ভয় পান। মাঝে মাঝে এক্সিডেন্ট হচ্ছে। মেরামত খাতের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় লাইটগুলো ঠিক হচ্ছে না। গোপালগঞ্জে বিনোদনের জায়গার অভাবে অনেকে বিকালে চাপাইর ব্রিজে ঘুরতে যান। কিন্তু সন্ধ্যার পর ব্রীজে লাইট না থাকায় অনেকে দুর্ভোগে পড়েন।
দুদক কর্মকর্তাদের বক্তব্য হলো; চাপাইল ব্রীজেরটি তৈরী করে এলজিইডি বিভাগ। গেজেট করে সড়ক বিভাগে হস্তান্তর হলেও সড়ক বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে কাজ না করায় লাইট নষ্ট থাকার পরও ঠিক হচ্ছে না। হরিদাসপুর ব্রীজের লাইট নষ্ট হলেও বাজেট না থাকার অযুহাতে ঠিক করা হয়নি মর্মে জানা গেছে। উভয় ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিকতায় জন দুর্ভোগ হচ্ছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।
আরো অভিযোগ রয়েছে, গোপালগঞ্জ সদর থেকে টেকেরহাট রাস্তার কিছু অংশের কাজ কয়েক বছরেও শেষ হয়নি। কিছু ব্রীজের উপর পিচ না থাকায় সমতল রাস্তা হতে ৫-১০ ইঞ্চি নিচু হওয়ায় ও সতর্কতা সাইন না থাকায় হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় প্রায়স গাড়ি এক্সিডেন্ট করছে ও গাড়ীর ক্ষতি হচ্ছে। ২০২২ সালে কাজ শুরু হলেও অদ্যাবদি কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ হচ্ছে মর্মে টিমরে নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ৬০০টি ৩০ ওয়াটের সড়কবাতি স্থাপনের কথা থাকলেও নিম্নমানের ২০ ওয়াটের বাতি লাগিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট সংগ্রহ করে চূড়ান্ত মন্তব্য করা যাবে। তবে সরেজমিন পরিদর্শনে লাইটের মান সন্তুষজনক মর্মে প্রতীয়মান হয়নি।
ঢাকা - খুলনা হাইওয়ের (গোপালগঞ্জ অংশে) মেরামতের বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ যথাযথ ব্যয় হচ্ছেনা মর্মে জানা গেছে। বিগত ৪-৫ বছরে ব্যায়ের তালিকা যাচাই করলে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করা হবে।
আ. দৈ./কাশেম