প্যারিসে আয়োজিত পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটি (PHC) সামিট ২০২৫ এ অংশ নিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। গত ১৮-২১ মার্চ ২০২৫ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বিশ্বব্যাপী নগর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্মেলন ‘পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ সামিট ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিজ ও প্যারিস সিটি কর্তৃপক্ষের আয়োজনে আয়োজিত এই সম্মেলনে ৬১টি শহরের ১২জন মেয়রসহ মোট ৩৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছে।
আজ শনিবার (২২ মার্চ) গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন, ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন । তিনি আরো জানান, প্যারিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য শহরে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বর্তমানে ঢাকায় বায়ুদূষণ এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা। যেহেতু দূষণের কোন বাউন্ডারি নেই, তাই আমরা প্রতিনিয়ত আশেপাশের শহর ও দেশের শিল্পায়নের দ্বারা সৃষ্ট দূষণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আন্তর্জাতিক এই নেটওয়ার্ক ঢাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারে। এর ফলে পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ নেটওয়ার্কের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।'
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, 'আমাদের শহরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আমরা আগ্রহী না। যেহেতু জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলো লস এন্ড ড্যামেজ তহবিলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিতে দায়বদ্ধ তাই ঋণের পরিবর্তে তাদের প্রতি আর্থিক অনুদানের জন্য আহবান জানাচ্ছি।'
ঢাকাকে একটি ন্যায্য শহর গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ঢাকাকে শুধু হেলদি বা গ্রীন সিটি বললেই চলবে না—আমরা চাই এটি হোক ‘ন্যায্যতার শহর’। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন না হলে শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এসময় হেলদি ঢাকা গড়তে নগর ছাত্রাবাস, বিশ্রাম কেন্দ্র, ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।'
তিনি বলেন, 'পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ ইতিমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে বায়ুদূষণ পরিমাপের যন্ত্রসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে। সামিটে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। আমার জন্য এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে শুরু হওয়া ‘পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ’ এখন ৭৪টি শহরের একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক। জনস্বাস্থ্যের সাথে সম্পৃক্ত সমস্যা মোকাবিলা ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন শহরের মডেল ও কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার মাধ্যমে হেলদি সিটি গড়ার লক্ষ্যে এটি বিশ্বব্যাপী কাজ করছে। এই নেটওয়ার্কের পার্টনার হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন শহরের বায়ু দূষণ রোধে কাজ শুরু করেছে।