শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বিশিষ্ট অর্থনীতিবাদ অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শক্তিশালী করতে আরো ৫ থেকে ৭ অত্যন্ত দক্ষ নতুন উপদেষ্টা যুক্ত হচ্ছেন। ইতোমধ্যে নতুন এক উপদেষ্টার নিয়োগ প্রদান করে শপথ বাক্যপাঠের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকী উপদেষ্টাদের নিয়োগ এবং শপথ পাঠের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সূত্র মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রচন্ড চাপে রাখার পাশাপাশি নানা ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে বেশি সমালোচনা চলছে। এছাড়া ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের সাবেক মন্ত্রী. এমপি এবং নেতারা পালিয়ে থেকেও নানা ইস্যুতে দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল সুাষ্টর পায়তারা করছেন। আরো রয়েছে নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে দেশী-বিদেশ চক্রান্ত। এসব সামলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বতীকালীন সরকার। সীমিত উপদেষ্টাদের নিয়ে এতোগুলো মন্ত্রনালয় এবং দপ্তরের স্বভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সত্যিই চ্যালেঞ্জের বিষয়। যারফলে উপদেষ্টাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখিা দিয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে নতুন উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার এর নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। প্রেস সচিব বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক সি আর আবরার।
আগামীকাল বুধবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টায় বঙ্গভবনে নতুন এই দুই উপদেষ্টাকে শপথবাক্য পাঠ করানো হবে। অন্যদিকে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বিমান ও পর্যটন এবং ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মারা যান। এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেন। বর্তমান উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুধু পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন। নতুন একজন উপদেষ্টা যুক্ত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালনি সরকারে প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট উপদেষ্টার সংখ্যা হবে ২২ জন।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্বপরিবারে ভারতের দিরøীতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাবার পর ওইদিনই তার সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিলুপ্ত হয় । পরদিন গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। ওইসময় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের বাইরে ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থান করছিলেন।
এরপর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই সময় নিয়োগ পান ১৬ জন উপদেষ্টা। ঢাকা ও দেশের বাইরে থাকায় ৩ জন উপদেষ্টা ওইদিন শপথ নিতে পারেননি। তারা পরে শপথ গ্রহণ করেন। এর পরে আরো ৪ জন উপদেষ্টা অন্তর্র্বতী সরকারে যুক্ত হন। সর্বশেষ ১০ নভেম্বর ৩জন উপদেষ্টা যুক্ত হন। নতুন একজন উপদেষ্টা যুক্ত হওয়ার পর অন্তর্র্বতী সরকারে প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট উপদেষ্টার সংখ্যা হবে ২২ জন।
উপদেষ্টারা হলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ,ল্যফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান, আলী ইমাম মজুমদার, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর আ ফ ম খালিদ হোসেন, মাহফুজ আলম, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম,সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর জাহান বেগম,জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, ফরিদা আখতার,ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুর্শিদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, শেখ বশির উদ্দিন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
আ . দৈ./কাশেম