মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫,
১৪ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
লাইফস্টাইল
বিষাক্ত অভ্যাসে কমছে জীবনের মান
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Thursday, 16 January, 2025, 8:22 PM  (ভিজিট : 202)
ছবিঃ অনলাইন

ছবিঃ অনলাইন

প্রতিবার নিজেকে বদলে নিতে বছরের শুরুতে নানান পরিকল্পনা থাকে। তারপর মাস ঘুরতে না ঘুরতে কোথায় যেন হারিয়ে যায় সব শপথ। তবে জীবনের মান উন্নত রাখতে সারা বছর কিছু অভ্যাস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখাই হবে মঙ্গলজনক। তাই নতুন বছরে নতুন লক্ষ্য পূরণ হোক বা না হোক, এসব অভ্যাস অন্তত ত্যাগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন মনো-চিকিৎসকরা।

ঘুমানোর আগে মোবাইল ঘাঁটা

বিরামহীনভাবে মোবাইল ফোন দেখলে মন উত্তেজিত হয়, আর শান্ত হতেও সময় লাগে বলে মন্তব্য করেন টেক্সাস নিবাসী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জিশান খান। এর পরিবর্তে তিনি ‘ডিজিটাল সানসেট’ করার পরামর্শ দেন। সেটা হল ঘুমাতে যাওয়ার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট আগে যে কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের পর্দা দেখা বন্ধ করা। আরও ভালো হয় যদি মোবাইল ফোনটা রেখে বই পড়া, জার্নাল লেখা বা ধ্যান করার অভ্যাস রপ্ত করা যায়।

শারীরিক কর্মকাণ্ডে অবহেলা

চাকরি, সংসার, নানান দায়িত্ব পালন করে বেশিরভাগেরই ব্যায়াম করার সময় হয় না। এজন্য যে অলসতার অভ্যাস ত্যাগ করা যাবে না এমন কোনো কথা নেই।মানসিক চাপ বাড়ানো, মন মেজাজ খারাপ করা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অলস পড়ে থাকার অভ্যাস- বলেন ডা. খান। শারীরিক কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো কঠিন না ভেবে বরং জীবনের অংশ হিসেবে ধরে নিলেই অলস সময় কাটানোর বিষয়গুলো সরিয়ে রাখা যাবে। হতে পারে সেটা অল্প দূরত্বে হাঁটা, কিংবা কাজের ফাঁকে ছোটখাট ব্যায়াম অথবা ইয়োগা করা- পরামর্শ দেন এই মনোচিকিৎসক।

কাজের মাঝে বিরতি না নেয়া

অফিসে গিয়ে কিংবা বাসা থেকে- ধরন যেমনই হোক, একটানা কাজ করা ক্ষতিকর। আবার এমনও না যে, বিরতি না নিলে কোনো পুরষ্কার মিলবে। এভাবে মন্তব্য করেন মনোবিজ্ঞানি ও নিবন্ধিত ‘ক্লিনিকাল সোশাল ওর্কার’ কিনান শেলটন বলেন, “এমনকি কাজের মধ্যে পাঁচ মিনিট বিরতিতে শরীর-মন চাঙা হয়ে ওঠে। কাজে গতি আসে।” কাজের ফাঁকে - হাত-পা টান টান করা, পানি পান বা একটু হাঁটাহাঁটি করার পরামর্শ দেন তিনি।

আবেগ তাড়িত কেনাকাটা

আবেগের তাড়নায় কেনাকাটা বাদ দিলে শুধু যে আর্থিক অবস্থাই নয়, মনের স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। ডা. খান বলেন, “এই ধরনের কেনাকাটার অভ্যাস যেমন আর্থিক চাপ বাড়ায় তেমনি মনের মাঝেও জঞ্জাল তৈরি করে।” এই অভ্যাস ত্যাগ করতে ‘২৪ ঘণ্টার নিয়ম’য়ের কথা বলেন ডা. খান। তার কথায়, “কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তারপর দেখুন আসলেই সেটা কেনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন কিনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাময়িক আবেগ থেকে কিছু কেনার ইচ্ছা হলে এক দিনের মধ্যেই সেই ইচ্ছা চলে যায়।” এছাড়া লোভে পড়ে কেনাকাটার অভ্যাস ত্যাগ করতে- ফোনে কোনো ‘অনলাইন শপ’য়ের অ্যাপ থাকলে ডিলিট করা, ফেইসবুক’য়ে এই ধরনের পেইজ ‘আনসাব্সক্রাইব’ করার পরামর্শ দেন তিনি।

সীমারেখা নির্ধাণ না করা

কর্মক্ষেত্রে, সম্পর্কে কিংবা ব্যক্তিগত কোনো বিষয়ের- অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস থেকে মুখ পিছলে অনেক কিছু বের হয়ে যায়। পরে সেগুলো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ডা. খান বলেন, “অতিরিক্ত কথা বলা, প্রায় সব কিছুতে ‘হ্যাঁ’ জানানো এক সময় জ্বলন তৈরি করে, সম্পর্কে নিয়ে আসে টান টান ভাব।” তাই এই বছর নিজের মুখ সামলানোর পরামর্শ দেন তিনি। তার কথায়, “কোন বিষয়টি জীবনে যোগ করলে মূল্য বাড়বে সেটা ভাবুন। সঠিক, দৃঢ় যোগাযোগ ও কথাবার্তার অভ্যাস করুন। নিজের লক্ষ্য পূরণে যেসব কাজ ও সম্পর্ক মিশে যায় সেগুলোকে গুরুত্ব দিন।”

নিজের যত্ন না নেয়া

শেল্টন বলেন, “যখনই নিজের যত্নের ব্যাপারে অবহেলা করা হবে তখনই নিজের আনন্দ অন্যদের মাধ্যমে চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে।” প্রতিনিয়ত নিজেকে অবহেলা করলে, অন্যরা সুবিধা আদায়ের সুযোগ নিতে থাকবে। শেল্টন ব্যাখ্যা করেন, “১২ ধাপে ত্বকের পরিচর্যা করা বা শখের কোনো জিনিস কেনা মানেই যে ‘সেল্ফ কেয়ার’ বিষয়টা তেমন নয়। টাকা পয়সা খরচ না করেও, প্রতিদিন অন্তত পাঁচ মিনিট মন ভালো করা মতো কোনো কাজ করা বা দিনের কোনো একটা সময় নিজের জন্য কিছু করার মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।”

পছন্দের খাবার নিজের জন্য রান্না করাও এক ধরনের নিজস্ব যত্ন নেওয়া পন্থা। কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডে আনন্দ মেলে সেটাও খুঁজে দেখা যেতে পারে। আর সেসব শখ ও ইচ্ছা পূরণ করতে ও নিজেকে সময় দিতে জীবনযাত্রার রুটিনের সাথে সমন্বয় করার পরামর্শ দেন, এই মনোবিজ্ঞানী। কোনো নিয়ম ভাঙা বা অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য ‘আত্ম-সহানুভূতি’ হল প্রধান চাবিকাঠি। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, অজানা কোনো অভ্যাস রপ্ত করতে ৩০ থেকে ৬০ দিন লাগতে পারে।

তাই বিষাক্ত অভ্যাস ত্যাগ করতে যদি প্রাথমিকভাবে কষ্ট হয়, তবে নিজেকে ক্ষমা করে দিয়ে প্রতিদিন চেষ্টা করে যেতে হবে। আর জীবনের সাথে মিলিয়ে নতুন রুটিনে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে- পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞদ্বয়।

আ. দৈ/ সাম্য
   বিষয়:  মনো-চিকিৎসক   পরিকল্পনা     
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের পক্ষে ইবি উপাচার্য
বিমানবন্দর থেকে আরও ৮০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
দেশের সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষের এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির গুঞ্জন, যা বললেন অ্যাডলফ
২ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি দেবে ডিএনসিসি
মেঘনা ব্যাংকের চট্রগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রশিক্ষন কর্মশালা
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতা
সীমান্ত ব্যাংক এবং সী পার্ল বীচ রিসোর্ট এন্ড স্পা এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
গণপূর্তে আবার ইসকনের থাবা, অজন্তার তদ্বিরে দিশেহারা গণপূর্ত অধিদপ্তর
পানির জন্য পল্লবীতে বিহারীদের সড়ক অবরোধ
বড় মেয়ের পালিয়ে বিয়ের জেরে, ছোট মেয়েকে ৪ বছর ঘরবন্দি করে রাখলেন বাবা
লাইফস্টাইল- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝