ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২ হাজার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) গুলশানের নগর ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির ৮ম কর্পোরেশন সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সভায় প্রশাসক জানান, “পূর্বে বছরে মাত্র ৯০০ শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি প্রদান করা হতো। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আমরা আবার এই উদ্যোগ চালু করছি। এখন থেকে ১ম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ২ হাজার শিক্ষার্থী মাসিক সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা করে বৃত্তি পাবে।” ডিএনসিসি শিক্ষাবৃত্তির ক্ষেত্রে নতুন করে বৃত্তির পরিমাণ ও ক্যাটাগরি পুনর্বিন্যাস করেছে। এখন থেকে চারটি স্তরে—১ম থেকে ৫ম শ্রেণি, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম, ৯ম-১০ম এবং ১১-১২শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন হারে বৃত্তি পাবে।
সভায় ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে-সব স্থানে ছাত্রজনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেসব স্থানে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্টাম্প’ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ইতিহাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
এ ছাড়া, উত্তরা ৪নং সেক্টর কবরস্থান, মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে অবস্থিত জুলাই শহিদদের ১৩টি কবর বাঁধাই করে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।
সভায় শহরের পার্ক ব্যবস্থাপনায় সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। ৫ম কর্পোরেশন সভায় গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের সাথে ডিএনসিসির শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ স্মৃতি পার্ক রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিল করা হয়। ক্লাবের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ ৮ম সভায় চুক্তিটি পুনর্বহাল করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হবে গুলশানের শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ স্মৃতি পার্ক।
এছাড়া বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ পার্ক এবং ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের দায়িত্ব গুলশান সোসাইটিকে এবং বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি পার্কের দায়িত্ব বনানী স্পোর্টস এরিনাকে প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে ডিএনসিসির সম্পাদিত চুক্তি সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় গুলশান এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছয় মাস মেয়াদে পরীক্ষামূলকভাবে গুলশান সোসাইটিকে প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় । এটি একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে, যার মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা যাচাই করা হবে।
সভায় সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত মার্কেট ব্যবস্থাপনা, ফুটপাত দখলমুক্তকরণ এবং নগর পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের ওপরও আলোচনা হয়। সভার শেষে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “নগরবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীলতায় আমরা একটি ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক ঢাকা গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।”এই সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগর পরিচালনায় জবাবদিহিতা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত হবে বলে সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
আ. দৈ./কাশেম