বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ডাইনিং চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই পূর্ব নোটিশ ছাড়া আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, দীর্ঘদিন পর গত ৬ ডিসেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিং চালু হলেও ১৪ ডিসেম্বর থেকে আবারও ডাইনিং বন্ধ রাখা হয়।
এ অবস্থায় পার্শ্ববর্তী অন্য হল ও ক্যাফেটেরিয়ায় দ্বিগুণ চাপ পড়ছে। অনেকে আবার সেখানেও খাবার না পেয়ে চড়া দামে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন পার্কের মোড়ে বিভিন্ন হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফাহিদ মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু হল বন্ধ থাকায় সবাই এলাহীতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করি। তবে ১টার মধ্যে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেককে বাইরে খেতে হয়। প্রভোস্টের অবহেলায় এমনটা হচ্ছে। অথচ ভিসি স্যার বলেছিলেন, আমার প্রথম টার্গেট শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়ার পরিবেশ ঠিক করা। এগুলো ঠিক থাকলে বাকি পরিবেশ এমনিতেই ঠিক থাকবে।
শিক্ষার্থী অলিউল ইসলাম বলেন, ডাইনিং বন্ধ থাকায় আমাদের কষ্ট হচ্ছে। এমনিতেই হলে সকালের খাবার নেই তারপরও ডাইনিং বন্ধ হওয়ায় আমাদের দুপুর ও রাতের খাবার খেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেতে হয়। সেখানে চড়া দামে খাবার খেতে হয়। বাইরের খাবার মানসম্মত না হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকি।
শাহরিয়ার রহমান বলেন, হল মাঝে মাঝে বন্ধ হওয়ায় আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। প্রতিদিনই ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকায় আমাদের হলে খেতে হয়। হল বন্ধ হলে খাওয়ার পেছনে দ্বিগুণ টাকা গুণতে হচ্ছে। এতে হল প্রভোস্টের খামখেয়ালির কারণেই এমনটা হয়েছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই। আর অন্তত বন্ধ করার আগে একটা নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল। এখন আমাদের বাইরে গিয়ে খেতে হচ্ছে। আশা করছি হল প্রশাসন দ্রুত এর ব্যবস্থা নেবে।
হলের শিক্ষার্থী মাহাবুর রহমান বলেন, শুনেছি লস হওয়ার কারণে ডাইনিং বন্ধ রেখেছিল। কারণ হিসেবে বলতে পারি, বেশি শিক্ষার্থী এখানে খেতে ইচ্ছুক না। অন্যদিকে মুখতার এলাহীতে ভিন্ন চিত্র। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু হলের খাবারের মান, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। এখানে রান্নার তেমন কোনো পরিবর্তন নাই, স্বাদে ভিন্নতা নাই, খাবারের বেশিসংখ্যক আইটেম নাই। তা ছাড়া অসতর্কমূলকভাবে রান্না করায় খাবারে বিভিন্ন কিছু পাওয়া যায়। হল প্রভোস্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সাজিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই হলে মিল কম চলে। আর অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজে রান্না করে খান,তাই ডাইনিং বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট আমির শরীফ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে সেটা আমরা নিজেরাও জানি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যে শিক্ষার্থীরা ডাইনিং চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে তাদের নাকি লস হয়ে যাচ্ছে সেজন্য তারা এ পর্যন্ত দুইবার ডাইনিং অফ রেখেছে। প্রথমবার লস হওয়াই আর দ্বিতীয়বার শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে ডাইনিং বন্ধ রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের এই গ্রুপ ডাইনিং চালাতে না পারলে শীতের ছুটির পর ডাইনিং চালাতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অপর এক গ্রুপের সঙ্গে আমরা বসবো।
আ. দৈ/ আফরোজা