অবশেষে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। দুর্নীতির মামলায় দণ্ড থেকে মুক্ত হওয়ার আড়াই মাস পর বিদেশে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন । প্রথমে তিনি যুক্তরাজ্যে যাবেন বলে জানা গেছে। বেগম জিয়ার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের সবশেষ দেখা হয়েছিল ২০১৬ সালে।
ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাজকীয় আমন্ত্রণে সপরিবারে ওমরা পালন করেছিলেন মা-ছেলে। এরপর কেটে গেছে আট বছর। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়নি মা খালেদা জিয়ার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগও পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। ফলে এই আট বছরে দেশের বাইরে কোথাও তার যাওয়া হয়নি।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে প্রথমে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য অন্য একটি দেশে নেওয়া হবে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক দিনের মাথায় গত ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে দণ্ড মওকুফ করে মুক্তি দেয়া হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দায়ের হওয়া পাঁচটি মানহানির মামলায় খালাস পান খালেদা জিয়া। সর্বশেষ গত ২৪ অক্টোবর ২০১৫ সালে সারা দেশে অবরোধ ও হরতালের মধ্যে পেট্রল বোমা বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় হুকুমের আসামি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দেন আদালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চেরিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়। দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করে তাঁর পরিবার। তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে তাঁকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
শর্ত ছিল খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৪০১ ধারা অনুসারে দণ্ড স্থগিত করে এই আদেশ দেয় হাসিনা সরকার।
এরপর অবশ্য খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে যেতে হয়নি। নিয়মিতভাবে সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ অবস্থায় গত ৬ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করে তাঁর পরিবার। সেই আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলে সুযোগ নেই বলে আবেদনটি নাকচ করা হয়। এরপর গত ২১ জুন রাতে খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসান চিকিৎসকেরা।
আ. দৈ. /কাশেম/