ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইমরাক হোসেন শপথ পড়ানো এবং মেয়রের দাঁয়িত্ব হস্থান্তরের দাবিতে টানা ৩৯ দিনের অসহযোগ আন্দোলনে নগর ভবনে ৬৫টি তালা ঝুলঁছে। আইনের মারপ্যাচ, ইতোমধ্যে ডিএসসিসির মেয়রের মেয়াদ শেষ,রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতায় নগর ভবনে তালা ঝুঁলানো এবং অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের কোন সুসংবাদ নেই। তবে আছে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাল্টা অ্যাকশনের আশঙ্কা।
কারণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত নগর ভবনে অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়দের ছবি,ভিডিও ফুটেজ থেকে এই আন্দোলনে অংশ নেয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বহিরাগতদের সনাক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এই অন্দোলনের উসকানি দাতাদেরও সনাক্ত করা হচ্ছে। এই তালিকা ধরেই অ্যাকশনে যাচ্ছে সরকার এবং প্রশাসন। এই বিষয়টি আচকরতে পেরেই ডিএসসিসির কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিজেদের রক্ষায় সরকার এবং প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বর্তমানে হতাশায় ভোগছেন ডিএসসিসিতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সমর্থিত কর্মচারীরা।
এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিনিধিককে বলেন, নগরবাসীর সেবামূলক সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখে প্রতিষ্ঠানের ‘টপ টু বটম’ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিম্মি করে অসহযোগ অন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে গেলে অনেকেই ধরা পড়বেন। নগর ভবনে ৬৫ টি তালা ঝুঁলানো এবং আন্দোলনকে জোরদার করতে যারা উৎসাহ দেয়ার পাশাপাশি অর্থ দিয়েছেন ,তাদের সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য নিয়েছে সরকার। সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র আর ছাড় পাচ্ছেন না অসহযোগ অন্দোলনকারীরা। একই সাথে তাদের চলমান অসহযোগ আন্দোলনকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার,নগরবাসী, অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।
তারা আরো বলেন, ডিএসসিসির মেয়র পদের দাঁয়িত্ব পাবার জন্য সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানকে অচল করা এবং পুরো নগরীর কয়েক কোটি মানুষ জিম্মি করার বিষয়টি কেউ মেনে নিতে পারচ্ছেন না। যদি বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন এতোটাই জনপ্রিয়তা নেতা হয়ে থাকেন, তাহলে ২০২০ সালে ডিএসসিসির নির্বাচনে ভোট গ্রহণকালে কেন্দ্রের এজেন্টসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচন বয়কট করে রাজপথ ছেড়ে গিয়েছিলেন কেনো। ওইদিন কেনো ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলতে পারেননি। ওইদিন তো নির্বাচনী মাঠ ছাড়ার সময় গণমাধ্যমের সামনে ওই নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ছিলেন। সেদিন ঢাকাবাসী এবং ডিএসসিসিতে কর্মরত বিএনপির সমর্থিত এতো প্রভাবশালী কর্মকর্তা -কর্মচারীরা কোথায় ছিলেন।
তারা আক্ষেপ করে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে ছাত্র জনতা জীবন বাজিরেখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘঠিয়েছেন। ওই সময় কয়েক হাজার লোক জীবান দিয়েছেন এবং আজীবন পঙ্গুত্বের শিকার আরো কয়েক হাজার লোক। তাদের মধ্যে অনেক চোখ,হাত, পা, হারিয়েছেন। অনেকের সাজানো সোনার সংসার তছনছ হয়েছে। তাদের পুনরবাসন এবং সুচিকিৎসার জন্য ঢাকা বাসীর ব্যানার এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোেরশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কি ভূমিকা রাখছেন। আর এখন ডিএসসিসির মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের পক্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে নগর ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন আর নগর নগর বাসীকে জিম্মি করে রেখেছেন। অথচ নগরবাসীর ট্যাক্সে এবং রাজস্বের টাকায় প্রতিমাসে বেতন নিচ্ছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান তালা বদ্ধ করে জনগণ এবং সরকার ও প্রশাসনকে জিম্মি করে রাখার নজীর নেই। অথচ ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে টানা ৪০ দিন যাবৎ তালা বদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এদিকে ইশরাক হোসেনের এই অন্দোলনের অভিভাবক ও প্রধান সমন্বয়ক সরকারের সাবেক আমলা মশি্উর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, চলমান অসহযোগ আন্দোনের সফলতা কিংবা ব্যর্থতা নিয়ে কোন কথা বলব না। তবে রোববার (২২ জুন) নগর ভবনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কি কর্মসূচি দেবেন ,জানতে চাইলে জবাবে বলেন আগে বলা যাবে না। এমনকি আন্দোলনের কর্র্মীদেরও আগাম জানানো হচ্ছে না। অন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সরকারের সাবেক আমলা মশি্উর রহমান চাকরি জীবনে ঢাকা সিটি করপোরেশনে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
নগর ভবনে ৪০ দিন যাবৎ ঝুলঁছে তালা, কোটি মানুষ জিম্মি :
নগরীতে আগ থেকেই চলমান ড্রেন নির্মাণ, পরিস্কার ও সংস্কার এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, ফুটপাথ ও গলিপথের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ থকায় এবার ভারি বৃষ্টিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় ডুবছে নগরবাসী। ময়লা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নগরীর নিম্মাঞ্চলের বাড়ি, ঘর, দোকান, পাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ও গলিপথ। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
সূত্র মতে, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে নাগরিক সেবার পাশাপাশি এই সংস্থার রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। চলতি অর্থ বছরের ‘মে ও জুন মাস’ ঢাকা দক্ষিণ সিটির হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স এবং মার্কেট শাখার মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের সুযোগ থেকে সম্পর্ণভাবে বঞ্চিত হয়েছে ডিএসসিসি। এই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় উন্নয়ন মূলক এবং নাগরিক সেবা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়, বার্ষিক রাজস্ব আদায় থেকেই।
এদিকে নমন্ডির বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার পাঁচ বছরের ছেলের জন্য জন্মসনদ প্রয়োজন। ওই এলাকাটির আঞ্চলিক ডিএসসিসি নগর ভবনের অঞ্চল-১-এ। তালাবদ্ধ থাকায় একাধিকবার ছেলের জম্মসনদ পাচ্ছেন না। বংশালের কাজী আলাউদ্দিন রোডে তিনমাস আগে একটি খাবারের দোকান চালু করেন ইমতিয়াজ আহমেদ। ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য গত ১৮ জুন দুপুরে নগর ভবনে অঞ্চল-৪ এর কার্যালয়ের সামনে যান তিনি। কিন্তু ভবনের ফটকে তালা ঝুলতে থাকায় তিনি আর ভেতরে ঢুকতে পারেননি।
আরেক ভুক্তভোগী যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক রোডের একটি চারতলা বাড়ির মালিক রেজাউল করিম। বাড়ির বকেয়া হোল্ডিং কর দিতে সায়েদাবাদে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসে যান তিনি। কিন্তু গিয়ে দেখেন এ আঞ্চলিক অফিসের ফটকেও তালা লাগানো। কর্মদিবসেও কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করছেন না। নাগরিক সেবার এমন বেহাল দশা ডিএসসিসিতে।
নাগরিকদের অভিযোগ, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনে তালা ঝুঁলিয়ে রেখেছেন তার সমর্থকরা। এ আন্দোলনের কারণে ঢাকা দক্ষিণের প্রায় দুই কোটি মানুষ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত। করপোরেশনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে সংস্থাটিতে জন্মনিবন্ধন সনদ, ট্রেড লাইসেন্স সনদ বিতরণসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা কার্যক্রম বন্ধ।
এছাড়া ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। মশক নিধন কার্যক্রমও মুখ থুবড়ে পড়েছে। অথচ নগরে এডিস মশার উপদ্রব ক্রমেই বাড়ছে। এছাড়া নগর ভবন বন্ধ থাকায় ঢাকা দক্ষিণের অনেক এলাকায় সড়কবাতি জ্বলছে না। সন্ধ্যার পরপরই সড়কে ঘুটঘুটে আঁধার নেমে আসছে। জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম থমকে আছে। ১০৯ দশমিক ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ডিএসসিসি গঠিত। এখানে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতাধীন ওয়ার্ড ৭৫টি। এসব ওয়ার্ডে প্রায় এক কোটি মানুষ বাস করে। এর মধ্যে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে যান। পৃথক ১০টি অঞ্চলেও হাজারো মানুষ নাগরিক সেবা নিতে যান।
ডিএসসিসির জনসংযোগ সূত্র মতে, জন্মসনদ, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, মৃত্যু-ওয়ারিশ সনদ বিতরণসহ ২৮ ধরনের নাগরিক সেবা দেওয়া হয়। এছাড়া ডিএসসিসি পরিচালিত হাসপাতালের কার্যক্রম, সড়ক, নর্দমা, ফুটপাত মেরামত, বাজার, ব্যায়ামাগার, কমিউনিটি সেন্টার, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, রাস্তার গাড়ি পার্কিং, গ্রন্থাগার, বাস টার্মিনাল, পাবলিক টয়লেট, পার্ক-খেলার মাঠ, হোল্ডিংয়ের নামজারি, কবরস্থান ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি সেন্টার বুকিং, বহুতল ভবনের অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু চলমান আন্দোলনের কারণে বন্ধ এসব সেবা কার্যক্রম।
ডিএসসিসির ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে নাগরিকদের জন্মসনদ বিতরণ করে সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে অঞ্চল-১ ও অঞ্চল-৪ এর কার্যালয় নগর ভবনে। বাকি আটটি অঞ্চলের কার্যক্রম ঢাকার বিভিন্ন অফিস থেকে পরিচালিত হয়। কিন্তু ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথকে কেন্দ্র করে নগর ভবনসহ সবগুলো আঞ্চলিক অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তার সমর্থকরা ।
এছাড়া লালবাগে ডিএসসিসির অঞ্চল-৩, সায়েদাবাদে অঞ্চল-৫, খিলগাঁওয়ে অঞ্চল-২ এর কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। এসব দপ্তরেও কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস করতে দেখা যায়নি। ফলে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন নাগরিকরা। গত ১৯ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় অঞ্চল-৩-এর কার্যালয়ে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নিতে যান কামরাঙ্গীরচরের মাদবরবাজার এলাকার বাসিন্দা কাদের খান। কিন্তু অফিসে তালা দেখে তিনি ফিরে যান।
সাধারণত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়ারিশ সনদ বিতরণ করতেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তারা পলাতক। এরপর থেকে ওয়ার্ড সচিব সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে এ সনদ বিতরণ করতেন। কিন্তু ২০ দিন ধরে দেখি সব অফিস বন্ধ। কিন্তু কেন বন্ধ বা কবে নাগাদ অফিস চালু হবে কেউ কিছু বলছে না।
চলতি মাসের শুরু থেকে ঢাকায় এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ ঘণ্টার আপডেটে প্রতিদিনই জানানো হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তির খবর। সামনের দিনগুলোতে এ মশার উপদ্রব আরও বাড়বে। অথচ বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের চলমান আন্দোলনের কারণে গত ১৪ মে থেকে ডিএসসিসিতে মশক নিধন কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। নগর ভবনসহ আঞ্চলিক অফিসগুলোতে তালা থাকায় মশার ওষুধও বের করতে পারছেন না সংস্থাটির কর্মচারীরা। ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, মশার ওষুধ নগর ভবনের নিচ তলাসহ আঞ্চলিক অফিসগুলোতে স্টোররুমে রাখা আছে। কিন্তু আন্দোলনের কারণে কেউ মশার ওষুধ বের করতে পারছেন না। এ কারণে নগরে ক্রমেই এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে মশা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
ডিএসসিসি প্রশাসক ওয়াসা ভবনে অফিস করেন:
ইশরাক সমর্থকদের টানা আন্দোলনের কারণে নগর ভবনে ঢুকতে পারছেন না ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া। তিনি ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বেও আছেন। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান বঙ্গবাজার-সংলগ্ন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের একটি কক্ষে বসে অফিস করেন বলে জানা গেছে। করপোরেশনে না গিয়ে নাগরিক সেবা কীভাবে পরিচালনা করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের আন্দোলনের কারণে বেশ কিছু নাগরিক সেবা বন্ধ। তবে এর মধ্যে শুনেছি, ডিএসসিসির তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মচারীকে নিয়ে বিএনপি নেতা (ইশরাক) বৈঠক করেছেন। তাদের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিধনে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনে দক্ষিণ সিটির নাগরিক সেবা সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে এভাবে নগর ভবন দখল রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়। এ বিষয়ে সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ দাবি আদায়ের নামে এভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটিতে প্রায় কোটি মানুষ বসবাস করে। প্রতিদিনই তাদের সেবার দরকার হয়। সরকারকে এ সেবা স্বাভাবিক করতে হবে। সামনে এডিস মশার উপদ্রব বাড়া ও জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা হতে পারে। এখনই প্রস্তুতি না নিলে নাগরিক ভোগান্তি আরও বাড়বে।