বাংলাদেশের মানুষ মানে ৯৮ ভাগ হিন্দু-মুসলমান, যেটা নজরুল ধারণ করতেন। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন বাংলাদেশ চর্চা করতে হলে নজরুল চর্চার বিকল্প নাই। বিষাক্ত দেশ ও ঘৃণার জন্মদাতা দেশ হলো ভারত। কারণ সেখানে একদিনে ৫০০ মসজিদ গুড়িয়ে দেয়া হয়। আমাদের দেশে নজরুল আছে বিধায় ঘৃণার চাষ হয় না। পৃথিবীর সব থেকে বেশি দালালি করছে বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। নজরুল তাদের বিরুদ্ধে সবসময় কথা বলেছেন।
আজ বুধবার (২১ মে) কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে বাংলা বিভাগের সহযোগিতায় নজরুল জয়ন্তী-২০২৫ উপলক্ষে সেমিনার ও আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে কবি, প্রাবন্ধিক ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার এসব বক্তব্য রাখেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আত্মসম্মানের জায়গায় যেভাবে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার একচ্ছত্র ক্রেডিট জিয়াউর রহমানের। উনি যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন বলেছিলেন যারা হিন্দু তারা হিন্দুই থাকবে। যারা পাহাড়ি তারা পাহাড়ি পরিচয় নিয়েই থাকবে। ফ্যাসিবাদের আইকন হলো রবীন্দ্রনাথ, যারা রবীন্দ্রনাথ চর্চা করে তারাই দেশদ্রোহী হয়েছে; তারাই দুঃশাসনের আধিপত্য বিস্তার করেছে। তারাই রবীন্দ্রনাথের নামে ৩টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। রবীন্দ্রনাথ চর্চা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে আর মুজিব ছিলেন তার অস্ত্র। রবীন্দ্রনাথের নামে ৫১ হাজার ওয়েবসাইট আছে অথচ নজরুলের নামে আছে মাত্র ১০ টা। এদিক থেকে সরকারের উচিত জাতীয় সম্পদ হিসেবে কাজে লাগানো।’
অনুষ্ঠানে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন।
সেমিনারে তিনি আরও বলেন, হিন্দুদের রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আর বাঙালি রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল ১৮৯৯ সালে নজরুলের জন্মের মধ্যে দিয়ে। বেঁচে থাকার জন্য যেমন প্রয়োজন আলো, বাতাস, খাদ্য ও পানি। ঠিক একসাথে চারটি বিষয়ের সমাগম নজরুলের মধ্যে পাওয়া যায়। দুধের সাথে সাদার যেমন সম্পর্ক; দেহের সাথে রুহের যেমন সম্পর্ক; নজরুলের সাথে বাংলাদেশের তেমন সম্পর্ক। নজরুলকে বাদ দিলে আমাদের যুদ্ধ অর্থহীন হবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও নারী অধিকার অর্থহীন হবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, জুলাই বিল্পবে রাস্তার গ্রাফিতি গুলো যারা একেছেন তারা একেকজন নজরুলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের সকল গ্রন্থ আমি পড়েছি কিন্তু কোথাও মহানবী (স.)-এর নাম নাই। উনি বাংলাদেশে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেননি বরং শিক্ষিত হও বলে অবজ্ঞা করেছে। অথচ রবীন্দ্রনাথ যখন নোবেল পেয়েছে তখন সর্বপ্রথম নওগাঁতে তার নামে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কলকাতা কেন্দ্রিক রাজাকারা বাংলার জন্য কী করেছে? পাপিষ্ঠ তারা। কলকাতার দালালের বাচ্চারা ইংরেজের রাজাকার ছিলো। নজরুল না জন্মালে ভেজা স্যাঁতসেঁতে বাংলা ভাষার মধ্যে অগ্নিগরিরির লাভা লুকায়িত আছে জানতাম না। ১৯২৯ সালের পর একমাত্র ইউনুস সরকারই তাকে জাতীয় কবি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, এসময় আমন্ত্রিত মেহমানদের উত্তরীয় ও ক্রেস্ট প্রদান-সহ জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আ. দৈ./কাশেম