রাজপথের সাহসী যোদ্ধা সাবেক এমপি,বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মতো নেতা আজবড়ই প্রয়োজন। ফ্যাসিস্ট সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ও সাজানো মিথ্যে মামলায় মাসের পর মাস কারাগারে আটকে রাখা হয় তাকে।
অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যু হয়। বিএনপির নেতাদের অভিযোগ বিএনপির বলিষ্ট নেতৃত্বকে দুর্বল করতেই নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার (৩ মে) ছিল নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুকে কারাগারে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ‘রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জালিম খুনি হাসিনা সরকারের পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার নাসির উদ্দিন পিন্টু।
বাবু গয়েশ্বরচন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাতীর জন্য পিন্টু নিজের জীবন দিয়েছেন। সে অনেক সাহসী ছিল। পরিকল্পিতভাবে পিন্টুকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য পিন্টু জীবন দিয়েছেন। পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড হলো একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মূল হচ্ছে শেখ হাসিনা। আমরা পিন্টুর হত্যার বিচার চাই। সরকার এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার করবেন এবং যারা হত্যা করেছে, তাদের জনসম্মুখে নিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।’
বিএনপি এবং পারিবারিক সূত্র মতে, ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ২ জুন হাইকোর্টের গেট থেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর পিলখানা হত্যার মিথ্যা মামলায় নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত। বিএনপি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। পিন্টুও এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।
২০১৫ সালে সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র গ্রহন করেছিল। এরপর ওই বছর ২০ এপ্রিল পিন্টুকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে রাজশাহী কারাগারে হস্তান্তর করা হয়।। অত্যন্ত পরিতাডের বিষয় হলো,
২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। যদিও তখন সরকার থেকে বলা হয়েছিল রাজশাহী কারাকবারে নেয়ার পরেথ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরে ৩ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার ডাক্তাররা পিন্টুকে মৃত ঘোষণা করে। পোস্টমার্টম রিপোর্টে বলা হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন এই কারা নির্যাতিত নেতা।
ওই সময় এ বিষয়ে ডা. রইস আরো গণমাধ্যমকে বলেছেন, পিন্টুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় রামেক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী তিনি ‘কারাগারে পিন্টুকে চিকিৎসার জন্য গেলেও সিনিয়র জেল সুপার তাকে পিন্টুকে চিকিৎসা করতে দেন নি।’ পিন্টুর পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবী হয় পরিকল্পিত ভাবে চিকিৎসা অবহেলা করে হত? হত্যা করা হয়েছে।
পিন্টুর স্ত্রী, বড় ভাই মশিউর রহমান দীপু, বোন ফেরদৌসী আহম্মেদ মিষ্টি, আইনজীবী আমিনুল ইসলাম এবং বিএনপির নেত্রীবৃন্দের অভিযোগ পিন্টুকে সরকারের ‘পরিকল্পিত হত্যা, বলে দাবী করা হয়। আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো কারন ছাড়াই রাজশাহী কারাগারে পিন্টুকে পাঠানো হয়েছে।
এটা সন্দেহজনক। জেল-জুলুম ও নির্যাতনের মধ্য দিয়েই ছাত্র রাজনীতিতে আবির্ভাব হয়েছিলো নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর। ািবএনপির এই নেতা রাজনৈতিক জীবনের বেশির ভাগ সময় কারাগারেই কাটিয়েছেন। আর কারাগার থেকেই শেষ বিদায় নিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি।
তৃণমূল থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ছিলেন তিনি। মহানগরীর ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ পরবর্তী আওয়ামী লীগ আমলে চার দফায় ২৩ মাস কারাভোগ করেন। ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকার -৮ লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। বিএনপি সরকারে থাকা অবস্থায়ও কারাগারে যেতে হয় তখনকার এমপি পিন্টুকে। ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে গ্রেফতার হয়ে প্রায় দুইবছর কারাভোগ করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের কাছে পরাজিত হন পিন্টু। সর্বশেষ কাউন্সিলে পিন্টুকে ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। কর্মীদের উদ্দেশ্যে পিন্টুর উক্তি, নীতি আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাও, মানসম্মান আল্লাহতালা বাড়িয়ে দিবে, দলের প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রাখিও একদিন মুল্যায়িত হবা।
আ. দৈ./ কাশেম