বাংলাদেশে নববর্ষ উদযাপনের খবর সংগ্রহে এসে ঢাকায় থেকেছেন ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সাংবাদিক সুচিন্তাপাল চৌধুরী। কিন্তু ঢাকা থেকে ফিরে গিয়ে তিনি যেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, প্রশাসন, দুর্নীতি এবং ধর্মীয় রাজনীতির ব্যর্থতা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি শুরু হয়েছে, "মেয়েটার জন্য কলঙ্কিত হলেন বাবা" বাক্যটি দিয়ে।
এই বাক্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবমূর্তি এবং শেখ হাসিনার কার্যক্রমের মধ্যে পার্থক্য টেনে আনেন লেখক। প্রতিবেদনে বলা হয়, “আজ দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা, দুর্নীতি ও নেতৃত্বহীনতার জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করছে তার নিজের দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই।”
‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর দাবি, শেখ হাসিনাকে ‘অপদার্থ’ বলছে আওয়ামী লীগের ভিতরের অসন্তুষ্ট নেতাকর্মীরা।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা করলেও শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রতি দেশের মানুষের আস্থা ভেঙে পড়েছে।”
ঢাকায় অবস্থানকালে ভারতীয় সাংবাদিকটি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে মাঠপর্যায়ের কিছু সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন।তিনি লিখেছেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক সদস্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন—আওয়ামী লীগ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করেছে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে, নিজেদের স্বার্থে।”
এছাড়াও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, “হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই ছিল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের মদদ।”তবে নতুন সরকার ও সেনাবাহিনীর কঠোর ভূমিকার ফলে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে বলেও স্বীকার করেছে পত্রিকাটি।
ধর্মীয় উগ্রবাদের বিস্তারের দায়ও বর্তেছে শেখ হাসিনার ওপর। পত্রিকাটি লিখেছে, “শুধু রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে ধর্মকে ব্যবহার করেছেন হাসিনা, যার ফল আজ ভয়াবহ।”
প্রতিবেদনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতির জন্যও শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার স্বার্থকে দায়ী করা হয়েছে। “নিজেদের রাজনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে স্বচ্ছ ও সম্মানজনক সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন।”
অন্যদিকে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে প্রতিবেদনটি তুলনামূলক ইতিবাচক। বলা হয়েছে, “নতুন সরকার প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় এটি একটি সময়োপযোগী পরিবর্তন।”