গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন এবং নিয়োগ কমিটির প্রশাসনিক ৩ কর্মকর্তাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, প্রতারণা ও ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় অভিযুক্ত অপর ৩ জন হলেন; নিয়োগ কমিটির সদস্য, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মোশারফ আলী। নিয়োগ কমিটির সদস্য, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মো: আব্দুল মান্নান এবং জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শারমিন চৌধুরী বর্তমানে সেকশন অফিসার।
রোববার (০২ মার্চ) গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান, দুদকের মহা পরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তর হোসেন। তিনি আরো জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বাদী হয়ে দন্ডবিধি ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর-৮।
আসামিদের ঠিকানা; সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন, পিতা- জহরুল ইসলাম খন্দকার, ঠিকানা: সাতাশিয়া, ডাকঘর- মামুদপুর, থানা- কাশিয়ানী, জেলা- গোপালগঞ্জ। প্রফেসর ড. মোশারফ আলী, পিতা-মতিয়ার রহমান, ঠিকানা: গ্রাম-পোড়াগাছা, ডাকঘর-মহিষখোলা, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরীয়তপুর।
প্রফেসর ড. মো: আব্দুল মান্নান, পিতা-মনির উদ্দিন গাজী, ঠিকানা: গ্রাম- দাতিনাখালী, ডাকঘর- মুরীগোয়ালিনী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। ও শারমিন চৌধুরী, পিতা- মো: আদিল উদ্দিন চৌধুরী, ঠিকানা: বাসা নং-১৭২৬, চৌধুরী বাড়ী, গ্রাম-বুইকরা, ডাকঘর-নোয়াপাড়া, অভয়নগর, থানা-নোয়াপাড়া, জেলা-যশোর।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সারের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আসামিরা গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সেকশন অফিসারের ১৬টি পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
এরআগে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে আসামি শারমিন চৌধুরীসহ ২০ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/ সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
উক্ত ১৬টি পদে ৮৭০ জন আবেদকারীর ডাটা শীটের তৎকালীন ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় উক্ত তালিকায় আসামি শারমিন চৌধুরী'র নাম নাই। তাছাড়া নিয়োগ কমিটির সুপারিশে তালিকার ৮৭৩ নম্বর ক্রমিকের শারমিন চৌধুরীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও বাস্তবে ৮৭৩ নম্বর ক্রমিক ডাটা শীটে নাই। অর্থাৎ আবেদন তথা তালিকায় না থাকার পরও জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে প্রার্থীর বয়স ৩২ বছর হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আসামি শারমিন চৌধুরী বয়স ৩৩ বছর ৩ মাস ছিল। অভিযুক্ত শারমিন চৌধুর'র জন্ম তারিখ: ২০-০৬-১৯৮৫ ইং অর্থাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে তার বয়স ৩৩ বছর ৩ মাস ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তার বয়স এক বছর ৩ মাস বেশি ছিল। তাকে বে-আইনিভাবে নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে ২০ জনকে নিয়োগ ও ডাটা শীটে নাম না থাকার পরও নিয়োগ দিয়ে সংশ্লিষ্টরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
আ. দৈ./ কাশেম