বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের নকশা অনুযায়ী তৈরি ব্যাটারিচালিত ই-–রিকশা ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলিত ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে চালকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষক তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রথম দফায় ২০০ জন প্রশিক্ষককে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ২৮, ২৯ ও ৩০ জুন । প্রথম পর্যায়ে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির মোট ১০টি অঞ্চলে প্রশিক্ষণ একযোগে পরিচালিত হচ্ছে। গুলশান নগর ভবন, উত্তরার অঞ্চল-১, মহাখালীর অঞ্চল-৩ এবং মিরপুরের অঞ্চল-২ ও ৪ –এ এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আজ শনিবার (২৮ জুন) সকালে গুলশানে নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীদার ছিলেন আমাদের রিকশাওয়ালা ভাইয়েরা। তাদেরকে যখন আমরা নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লাইসেন্সিং সিস্টেমে আনবো, তখন আর কেউ তাদের অবৈধ বলার সুযোগ পাবে না। তারা যথাযথ নাগরিক মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবেন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো: শাহজাহান মিয়া এবং বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এহসান, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং লে. জে. (অব.) আব্দুল হাফিজ. এনডিসি. পিএসসি, বিশেষ সহকারী, প্রতিরক্ষা ও সংহতি উন্নয়ন।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বক্তব্যে বলেন, “আগামী আগস্ট মাস থেকেই বুয়েটের ডিজাইন করা ব্যাটারিচালিত ই-–রিকশা নগরীর অলিগলিতে চলতে দেখা যাবে। আমরা এই যানবাহনের ডিজাইনে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। প্রশিক্ষিত চালকেরাই লাইসেন্স পাবেন এবং এই ব্যবস্থার মাধ্যমে নগরীতে রোড সেফটির একটি কার্যকর কাঠামো গড়ে উঠবে।”
প্রশাসক আরও জানান, একটি মানসম্পন্ন, নির্ধারিত গতিসীমার মধ্যে চলাচলযোগ্য এবং প্রযুক্তিনির্ভর ই–রিকশা ব্যবস্থা চালু করার মাধ্যমে নগরজীবনে সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও শৃঙ্খলিত গণপরিবহন বিকাশ পাবে। প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় নির্বাচিত ৩০০ জন প্রশিক্ষককে ‘মাস্টার ট্রেইনার’ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাঁরা পরবর্তী সময়ে ই–রিকশা চালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
বক্তারা বলেন, ই–রিকশা আজ নগরজীবনের পরিচিত ও জনপ্রিয় বাহন হলেও এর ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে শৃঙ্খলার অভাব ছিল। এই খাতে রোড সেফটি, ট্রাফিক আইন ও যাত্রীসেবার উন্নয়ন নিশ্চিত করতেই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি হাতে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের ডিজাইন অনুযায়ী রিকশাগুলোর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এগুলো চালানো যাবে ঢাকার প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে পাড়া–মহল্লার অলিগলিতে। প্রশিক্ষণের প্রথম দিনে অংশগ্রহণকারীরা প্রশিক্ষণ কনটেন্ট ও উপস্থাপন কৌশল শিখছেন। দ্বিতীয় দিনে প্রশিক্ষণ প্রদানের চর্চা, আর তৃতীয় দিনে রিকশার কারিগরি দিক ও রক্ষণাবেক্ষণের উপস্থাপনা শেখানো হচ্ছে।
আ. দৈ. /কাশেম