হঠাৎ করেই তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের কারন অনুস্ন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ক্ষমতার পালাবদলে ঝুট ব্যবসা দখল ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের অনুসারীদের মাধ্যমে নৈরাজ্যসৃষ্টি করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা। শ্রমিক সংগঠনের নেতারাও বলছে, একই কথা।
শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে উৎতি কিছু ঝুট ব্যবসায়ীরা মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তারা আশুলিয়ায় মটরসাইকেল সংযোজনের একটি কারখানায় শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টির মাধ্যমে ওয়েস্টেজ মালের ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় হোসেন ও বাদশাহ নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে।
গত কয়েকদিন ধরে সংঘবন্ধ এই চক্রটি আশুলিয়ার জিরানী এলাকার বাজাজ কোম্পানীর ট্রান্স এশিয়া ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে ওয়েস্টেজ মালের (কার্টুন ও পলিথিন) ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হোসেন ও বাদশার বাড়িতে ট্রান্স এশিয়া কারখানার কিছু শ্রমিক ভাড়া থাকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে কারখানায় অসন্তোষের সৃষ্টি করছে। সেই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ওয়েস্টেজ মালের ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
একইভাবে আলফা ক্লোথিং কারখানার ঝুট ব্যবসাও তাদের নিয়ন্ত্রনে নিতে কারখানার কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। তাদের হুমকিতে আতংকিত হয়ে পরেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুলিয়া এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে স্থানীয় নেতা যারা ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত এবং শিল্প এলাকায় চাঁদাবাজি করত তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পতনের পর নতুন চাঁদাবাজরা। মূলত শিল্প এলাকায় ঝুট ব্যবসা ও চাঁদাবাজি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতেই শ্রমিকদের উস্কে দেওয়া হচ্ছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, শান্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলকে কেউ অশান্ত করার চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তবে আতংকিত কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে এষিয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়ের্টাস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম ও মুরাদ জং’র অনুসারীরা তৈরি পোশাক শিল্পের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত, তারাই এখন বিএনপির স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের সাথে মিশে সক্রিয় হচ্ছে। শিল্প এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছেন নতুন করে।
এ ছাড়া সরকার পতনের পর নতুন কিছু চাঁদাবাজ সক্রিয় হয়েছে। এই নতুন-পুরোনো চাঁদাবাজরা শিল্প এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব ও দখলদারিত্ব নিতে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে পোশাক শিল্পে অস্থিরতা করতে চাচ্ছে। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক নির্মল কুমার দাস বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে হুমকিদাতা ও ঝুট ব্যবসা যারা দখলে নিতে শ্রমিক অসন্তোষের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আ. দৈনিক / কাশেম/ সেলিম