ইরান নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘এতেমাদ’ (যার অর্থ ‘বিশ্বাস’) উন্মোচন করেছে, যা ১,৭০০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। রবিবার তেহরানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এটি ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের এই সামরিক উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে, এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, "আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হলো, যেন কেউ ইরানের ভূখণ্ডে হামলার সাহস না দেখায়।"
এই ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন ইরানের জাতীয় মহাকাশ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এবং ইসলামি বিপ্লবের ৪৬তম বার্ষিকীর ঠিক আগে অনুষ্ঠিত হয়।
ইরান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন মহড়া পরিচালনা করেছে এবং ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাঁটির প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে, তারা পশ্চিমাদের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করার আগ্রহও দেখিয়েছে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে, ইরান নিজস্ব সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়নে মনোযোগ দেয়। ১৯৮০-১৯৮৮ সালের ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে ইরান নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদনে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়।
বর্তমানে ইরান স্বনির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোনসহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামের অধিকারী। নতুন ‘এতেমাদ’ ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের প্রতিরক্ষা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, যা তাদের সামরিক সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। তবে পশ্চিমা বিশ্ব এই উদ্যোগকে উদ্বেগের চোখে দেখছে এবং মনে করছে এটি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আ. দৈ./ সাধ