সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য এবারের বিপিএল ছিল একেবারে হতাশার। লিগ পর্বের ১২টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটি জিতেছে দলটি, আর পরপর সাতটি ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে। মোট ১০টি ম্যাচে হারের তিক্ত স্বাদ নিতে হয়েছে সিলেটকে। এমন বিপর্যয়ের মধ্যেই নতুন এক বিতর্কের জন্ম হয়েছে—দলের অধিনায়ক আরিফুল হকের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ৯৬ রানের বড় ব্যবধানে হারার পর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের কোচ মাহমুদ ইমন। সেখানে আরিফুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে আলাদা ডিপার্টমেন্ট রয়েছে, যারা বিষয়টি দেখবে।"
সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপিএল যাত্রা শুরুটা ভালো হলেও পরে তাদের পারফরম্যান্স তলানিতে গিয়ে ঠেকে। দলের ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমন বলেন, "আমাদের শুরুটা খারাপ ছিল না। দল গঠন ও পরিকল্পনা ঠিকঠাক ছিল। সিলেটে প্রথম কয়েকটি ম্যাচ কঠিন প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে ছিল, যেমন রংপুর ও বরিশাল। যদিও টি-টোয়েন্টিতে কাগজে কলমে বড় দল বলে কিছু হয় না।"
কোচ পরোক্ষভাবে দলের খেলোয়াড়দের দায়ী করেছেন, "দলের যেসব খেলোয়াড়ের কাছ থেকে ভালো পারফরম্যান্স প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি। যদি তারা ভালো করতেন, তাহলে হয়তো আমাদের ফলাফল ভিন্ন হতে পারত। এটি আমাদের প্রথম বিপিএল অভিজ্ঞতা, যা পয়েন্ট টেবিলই বলে দিচ্ছে।"
তবে ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতি কোনো অভিযোগ না রেখে বরং তাদের সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন ইমন। তিনি বলেন, "প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজি চায় তাদের দল ভালো করুক। তবে আমি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ তারা শেষ পর্যন্ত সব খেলোয়াড়ের পাশে থেকেছে। সবাইকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছে, সব ধরনের সমর্থন দিয়েছে। তবে আমরা ভালো ফল আনতে পারিনি।"
এবারের বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে খেলার কথা ছিল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নানা চাপে পড়েন তিনি। এর পাশাপাশি ফিটনেসজনিত সমস্যার কারণে বিপিএলে অংশ নিতে পারেননি ৪১ বছর বয়সী এই তারকা ক্রিকেটার।
মাশরাফির না থাকাটা সিলেটের পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা দিয়েছে বলে ইমনের কথায় ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তিনি বলেন, "আমাদের মূল পরিকল্পনা ছিল মাশরাফিকে অধিনায়ক করা। কিন্তু তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। এরপর আমরা জাকির হাসানকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে নিজেই নেতৃত্ব নিতে চায়নি। কাউকে জোর করে তো অধিনায়ক বানানো যায় না। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আরিফুলকে বেছে নেওয়া হয়, কারণ সে আগের বিপিএল আসরগুলোতে খেলেছে এবং স্কোয়াডের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে যোগ্য মনে হয়েছে।"
আ. দৈ./ সাধ