এশিয়া মহাদেশ তো বটেই, বিশ্ব ফুটবলেরই অন্যতম শক্তিধর দল দক্ষিণ কোরিয়া। ফিফা র্যাঙ্কিংয়েও বাংলাদেশের চেয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে তারা। সেই কোরিয়ার সঙ্গে ম্যাচে প্রথমার্ধে সমান তালে লড়াই করেছিল বাংলার মেয়েরা। তবে বিরতির পর অগোছালো ফুটবলে শেষ পর্যন্ত বড় হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পিটার বাটলারের দল।
রোববার (১০ আগস্ট) লাওসের ভিয়েনতিয়েনে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এই জয়ে গ্রুপ এইচ থেকে তিন ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে তারা। অন্যদিকে ৩ ম্যাচ থেকে ২ জয়ে পাওয়া ৬ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ।
নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এদিন খেলা শুরুর পর প্রথম আক্রমণ করেছে বাংলাদেশই। ফরোয়ার্ড মোসাম্মৎ সাগরিকা প্রথম মুভেই গোলের সুযোগ রচনা করেছিলেন। কোরিয়ান গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় অবশ্য সেটা আর হয়নি। বাংলাদেশের গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৫ মিনিটে সংঘবদ্ধ আক্রমণে বাংলাদেশ লিড নেয়।
কাউন্টার অ্যাটাকে সাগরিকা ও শান্তি মারডি নিজেদের মধ্যে বল দেয়া-নেয়া করে বক্সে প্রবেশ করেন। বক্সের বা দিক থেকে শান্তি বল বাড়ান। কোরিয়ান গোলরক্ষকের হাতের নিচ দিয়ে বল সামনে আগায়। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীমতী তৃষ্ণা রাণী টোকা দিয়ে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি। মুহূর্তেই গ্যালারীতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা আনন্দে মেতে ওঠেন।
তবে সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি বাংলার মেয়েরা। তিন মিনিট পরই কোরিয়া খেলায় সমতা আনে। বাংলাদেশের হাই লাইন ডিফেন্স কোরিয়ার এক লং বলে পরাস্ত হয়। দ্রুতগতির কোরিযান ফরোয়ার্ডরা বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে বাংলাদেশের গোলরক্ষক স্বর্ণা রাণীকে একা পেয়ে গোল করেন। এরপর এই সমতা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষে করে দুই দল।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ কোরিয়া আগ্রাসী ফুটবলে নাস্তানাবুদ করে পিটার বাটলারের শিষ্যদের। বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে একে একে পাঁচবার জাল খুঁজে নেয় তারা। ৬১ মিনিটে আরেকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণে অধিনায়ক চো হেং আগুয়ান গোলরক্ষক স্বর্ণাকে পরাস্ত করে গোল করেন। পরের গোলটিও একইভাবে হজম করে বাংলাদেশের মেয়েরা।
৮৪ মিনিটের দিকে বাংলাদেশের ডিফেন্ডার কোরিয়ান ফরোয়ার্ডকে ফাউল করেন। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। কোরিয়ান অধিনায়ক পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ৪-০ করেন। শেষ দশ মিনিটে আরো দুই গোল হজম করে বাংলাদেশ। এতে বড় হার সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয় আফঈদাদের। তাতে লাওসে ভিয়েনতিয়েনে বাংলাদেশের শেষটা হলো দুঃস্বপ্নের মতোই।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে ৩২ দল আট গ্রুপে খেলছে। আট গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও সেরা তিন রানার্স আপ আগামী বছর থাইল্যান্ডে মূল পর্বে খেলবে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আট গ্রুপের রানার্সআপদের মধ্যে তিন নম্বরে অবস্থান করছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আজ গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলোর ফলাফলের উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়া কাপ খেলা।