রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘সচেতন নাগরিক ফোরামের’ ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাহজাদপুর পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণের দাবি স্থায়ী ক্যাম্পাস দীর্ঘদিনেও হয়নি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সবাই দুর্নীতি ও নিয়োগ-বাণিজ্যে ব্যস্ত ছিল। এখন শিক্ষার্থীরা জ্বলে উঠেছেন, তাঁদের আর কোনো দাবিদাওয়া নেই। তাঁদের দাবি একটাই, সেটি হচ্ছে স্থায়ী ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর প্রায় আট বছর পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থায়ী ক্যাম্পাস ও হল তৈরি হয়নি।
অস্থায়ীভাবে শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও মাওলানা সাইফুদ্দিন কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীর জন্য পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাম্পাস ও হল না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকছেন।
গত আট বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সব দিক থেকেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন দাবি করে বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার মাঠ না থাকায় শারীরিকভাবে যেমন বেড়ে উঠতে পারছেন না, তেমনি মানসিকভাবেও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে অতি দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ডেলিভার্ড ডিউটি পেমেন্ট (ডিডিপি) বাজেট করা হয়েছিল ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এরপর এটি পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রথমে পুনর্গঠিত প্রস্তাবনা করা হয় ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এভাবে সাতবার বাজেট পুনর্গঠিত প্রস্তাবনার পর অষ্টমবারে ৫৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা পুনর্গঠিত ডিডিপি বাজেট প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের মেয়াদের সময় হবে ১ মার্চ ২০২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৯ সাল পর্যন্ত। গত মঙ্গলবার ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়ার সই করা একটি পত্রের মাধ্যমে এটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক মির্জা হুমায়ুন, নাসিম উদ্দিন মালিথা স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকারিয়া ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিমল কুমার, সচেতন ফোরামের উপদেষ্টা মাওলানা আবু জাফর, আবদুল মমিন, শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আলমাস আনসারি, ব্যবসায়ী নেতা আক্তার হোসেন ও মইনুল হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান ও মইনুল হোসেন, তাঁত ও বস্ত্র ব্যবসায়ী নেতা হাফিজুর রহমান, রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আ. দৈ/ সাম্য