কর্মচারীদের সহযোগিতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১০ নম্বর আউটফল স্টাফ কোয়াটারের ১৮০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৬৫টি ফ্ল্যাট অবৈধ দখলে রেখেছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। ওই স্টাফ কোয়াটারের অবৈধ দখলকারীরা এতোটাই প্রভাবশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা কিংবা তাদের উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়ার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছেন না ডিএসসিসির প্রশাসন। ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে গোপনে আতাতের মাধ্যমে বহিরাগত দখলদারা বিনা ভাড়ায় মাসের পর মাস পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিএসসিসির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বরাদ্দ প্রাপ্ত ওই স্টাফ কোয়াটারে বসবাসকারী কর্মচারীরা প্রতিমাসে গড়ে ১৫ হাজার টাকা থেকে ১৯ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল পরিশোধ করছেন। প্রতি মাসে তাদের বেতন থেকে ডিএসসিসির কর্তৃপক্ষ এই অর্থ কেটে নিচ্ছেন। আর ৬৫টি ফ্ল্যাটের অবৈধভাবে বসবাসকারী ডিএসসিসিকে কোন ধরনের বাসাভাড়া, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাগের বিল দিচ্ছেন না। এতে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ডিএসসিসির।
শুধু তাই নয়, এই ৬৫টি ফ্ল্যাটের ভাড়া তো পাচ্ছেনই না, এরবাইরেও তাদের ব্যবহ্নত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল পরিশোধ করচ্ছে ডিএসসিসি। বিলের একটা বড় অংশ বৈধভাবে বসবাসকারীদের ওপর চাপানো হচ্ছে। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের উৎপাত এবং অত্যাচারে পারিবার নিয়ে গভীর উদ্ভেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ওই কোযাটারে বৈধভাবে বসবাসকারীরা।
এদিকে নিরুপায় হয়ে গত ২৭ অক্টোবর ওই কোয়াটারের স্থায়ী অনুমোদন প্রাপ্ত কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বহিরাগত ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে ডিএসসিসির , প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,সচিব, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দপ্তরে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরই রাতারাতি ডিএসসিসির ১০ নম্বর আউটফল স্টাফ কোয়াটারের ১৮০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৬৫টি ফ্ল্যাট অবৈধভাবে দখল করেছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। ফলে বৈধভাবে বসবাসকারী ১১৫টি ফ্ল্যাটের নিরীহ কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যেকোন সময় বড় ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শিকার হবার আতঙ্কে রয়েছেন ওই কোয়াটারের নিরীহ লোকজন।
অবৈধ দখলে থাকা ফ্ল্যাটগুলো হচ্ছে; ১ এর--ক,গ, ২ এর--খ,ঘ,ছ,জ, ৩ এর--খ,গ,জ, ৪ এর--গ,,৫ এর--গ,ঙ, ৬ এর-- ক,,চ, জ,৭ এর--খ, গ,ঙ,ছ,,জ, ৮এর-খ,গ,ঙ,ছ,৯ এর--ঘ,,জ,১০ এর--ঘ,ছ, ১১ এর--খ,চ,জ, ১২ এর-- গ,ঘ, ১৩ এর-- গ,. ১৪ এর-- ক,১৫ এর--ক,খ,গ,ঘ,১৬ এর--ক, খ,গ,ঘ, ঙ,চ,,ছ,জ, ১৭ এর-- চ,জ,. ১৮ এর-- ক, ঙ,, ১৯ এর-- ক, খ, ২০ এর-- গ, জ, ট,ঠ,ঢ, ঙ,, ২১ এর--ঝ, ট,ড,ঢ, এবং ণ সহ মোট ৬৫টি ফ্ল্যাট অবৈধ দখলদারদের নিয়ন্ত্রনে। কর্মচারীদের পক্ষ থেকে দায়ের করা আবেদনটি নথি চালাচালির মাধ্যমে টানা দুই মাস অতিক্রম করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই বিষয়ে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তার দপ্তরের নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক কর্মচারী জানান, মিজানুর রহমান নামে একজন সার্ভেয়ারের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা ওই কোয়াটারের অবৈধ দখলদারের বিষয়টি নিয়ে জরীপ করেছেন। কিন্তু জরীপে অবৈধ দখলদারদের নাম পরিচয় পাওয়া সত্বেও প্রতিবেদনে তাদের নাম উল্লেখ করেননি। কারণ তাদের বেশির ভাইই নাকি সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী।
এদিকে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবীর (উপসচিব) সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে তার মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। এরপরও তিনি ফোন রিসিপ করেননি। যারফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আ. দৈ. / কাশেম