যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন অনিবার্য নয় এবং এ বিষয়ে আলোচনার পথ এখনো খোলা রয়েছে। নিউইয়র্কের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্লিঙ্কেন উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক পরাজয়ের মুখে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারে। ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়েছে, হিজবুল্লাহর শক্তি হ্রাস পেয়েছে এবং সিরিয়ার মিত্র বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভেঙে পড়ার ফলে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের ইচ্ছা বাড়তে পারে। তবে এর ফলে ইরানকে চরম পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। কিন্তু ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছিলেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি শক্তিশালী ও কার্যকর একটি চুক্তি চান, যা যৌক্তিক। তিনি আরও যোগ করেন যে, কোনো মার্কিন প্রশাসনই ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেবে না।
২০১৫ সালের চুক্তি পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা শুরু করেছিল। তবে নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ নিয়ে মতবিরোধের কারণে আলোচনা ভেঙে যায়। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে হামাসকে ইরানের সমর্থনের বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র চাপ বাড়িয়েছে।
ব্লিঙ্কেন ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাত করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, গত দুই দশকের অভিজ্ঞতায় শাসন পরিবর্তনের উদ্যোগগুলো সফল হয়নি। তবে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও রাজনৈতিক বিভাজন সম্পর্কে তিনি সচেতন বলে জানান।
এই মন্তব্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা সত্ত্বেও সমাধানের জন্য আলোচনা চালানোর সুযোগ এখনো রয়েছে।
আ. দৈ./ সাধ