ইরানের তেলশিল্পের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব বৃদ্ধি করেছে দেশটির বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি)। বর্তমানে তারা ইরানের তেল রপ্তানির প্রায় অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করছে। জ্বালানি তেল ইরানের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রার উৎস এবং মধ্যপ্রাচ্যে সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর তহবিল জোগান দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরেও তেল বিক্রি থেকে ইরান বছরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। এই আয়ের বেশির ভাগই চীনের মতো ক্রেতাদের কাছে গোপন পথে পৌঁছাচ্ছে। এ ছাড়া আইআরজিসি তেল রপ্তানির জন্য একাধিক ‘ঘোস্ট ট্যাংকার’ ব্যবহার করে।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করলে, আইআরজিসি তাঁদের কৌশল বদলে তেল রপ্তানি শুরু করে। আগে তেল রপ্তানির বিষয়টি মূলত জাতীয় তেল কোম্পানি (এনআইওসি) পরিচালনা করত। তবে আইআরজিসি তাঁদের দক্ষ চোরাচালান কৌশলের কারণে এই খাতে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইআরজিসি তেল রপ্তানিতে বড় ধরনের ছাড় দিয়ে বাজারে প্রতিযোগিতা করছে। আর এই আয় থেকে হিজবুল্লাহ, হামাস এবং ইয়েমেনের হুতিদের মতো গোষ্ঠীকে অর্থের জোগান দিচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, হিজবুল্লাহর বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ সরাসরি ইরান থেকে আসে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) নিয়ন্ত্রিত বেশ কয়েকটি ট্যাংকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আইআরজিসি তাঁদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই শক্তিশালী তেল রপ্তানি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আইআরজিসি শুধু ইরানের অর্থনীতিতে নয় বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বাড়িয়েছে।
আ. দৈ/ আফরোজা