সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে একটি স্থানে প্রায় ১ লাখ মানুষের গণকবর রয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অ্যাডভোকেসি সংস্থা। সংস্থাটির দাবি, এই মানুষগুলো সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের শাসনামলে হত্যার শিকার হন। এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিরিয়ান ইমার্জেন্সি টাস্ক ফোর্সের প্রধান মৌয়াজ মুস্তাফা এই দাবি করেন। তিনি জানান, গণকবরটি দামেস্ক থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে আল-কুতায়ফাহ এলাকায় অবস্থিত। তার মতে, দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় যেসব গণকবরের সন্ধান মিলেছে, এটি তার মধ্যে অন্যতম।
মুস্তাফা আরও জানান, এই স্থানে সমাহিত মৃতদেহের সংখ্যা আনুমানিক ১ লাখ। এমনকি এটি খুবই রক্ষণশীল অনুমান বলে মন্তব্য করেন তিনি। মুস্তাফা দাবি করেন, সিরিয়ায় এ ধরনের আরও পাঁচটি গণকবর রয়েছে। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, তারা এই দাবির স্বতন্ত্র যাচাই করতে পারেনি।
২০১১ সালে বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় গণবিক্ষোভ শুরু হলে, আসাদ সেই বিক্ষোভ দমাতে দমন-পীড়নের কৌশল নেন। কথিত আছে, গত ১৩ বছরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় আসাদের বাহিনী কর্তৃক কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। আসাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গোপন কারাগারে আটকে রেখে নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
বাশার আল আসাদ ২০০০ সালে তার বাবা হাফিজ আল আসাদের মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন। তার বাবা হাফিজ আল আসাদ টানা ২৯ বছর সিরিয়ার শাসক ছিলেন। বাশারও ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে সিরিয়ায় আসাদ শাসনের অবসান ঘটে।
বিদ্রোহীদের হাতে দামেস্কের পতন
গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীরা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে নেয়। এরপর বাশার আল আসাদ রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে আসাদ পরিবারের টানা পাঁচ দশকের শাসনের অবসান ঘটে। তবে সিরিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত কৌসে আলদাহকে এ বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
সিরিয়ার এই গণকবরের সন্ধান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নজরে এসেছে। এমন অভিযোগ সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা ও ভয়াবহতা আরও স্পষ্ট করে তুলছে। এই গণকবর আবিষ্কারের পর আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আ. দৈ./ সাধ