ঘুমের প্রসঙ্গ এলে প্রথমেই রাতে ঘুমানোর কথা মাথায় আসে। তবে দুপুরের খাবার খাওয়ার পর অনেকেই কিছুটা সময় ঘুমিয়ে নেন, যাকে বলা হয় ‘ভাতঘুম’। প্রশ্ন হলো, এই দুপুরের ঘুম কি শরীরের জন্য উপকারী, নাকি ক্ষতিকর?।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিকভাবে এবং নিয়ন্ত্রিত সময়ে দুপুরে ঘুমানো শরীর ও মনের জন্য অনেক উপকারী। তবে নিয়ম না মানলে তা নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে।
দুপুরে ঘুমের উপকারিতা=
১. শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার:
দুপুরের একটি সংক্ষিপ্ত ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। এটি দিনের বাকি সময় কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
২. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি:
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০-৩০ মিনিটের ঘুম স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মনোযোগ উন্নত করে।
৩. মানসিক চাপ হ্রাস:
দুপুরে ঘুম মানসিক প্রশান্তি আনে, স্ট্রেস কমায় এবং মনকে সতেজ রাখে।
৪. হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়:
নিয়মিত দুপুরে ঘুমানোর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
দুপুরে ঘুমের সতর্কতা=
১. অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা:
দুপুরে এক ঘণ্টার বেশি ঘুমালে মস্তিষ্কে ঝিমঝিম ভাব দেখা দিতে পারে। ঘুম থেকে উঠে ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
২. রাতের ঘুমে ব্যাঘাত:
দুপুরে অতিরিক্ত ঘুমালে রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ঘুমের চক্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৩. ওজন বৃদ্ধি:
দুপুরে অতিরিক্ত ঘুম এবং শারীরিক কার্যক্রম কম থাকলে শরীরে ফ্যাট জমে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়।
সঠিকভাবে দুপুরে ঘুমানোর নিয়ম=
১. সময়সীমা নির্ধারণ করুন:
দুপুরে ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে ঘুম শেষ করুন। দীর্ঘ সময় ঘুমানো এড়িয়ে চলুন।
২. সময় নির্বাচন করুন:
দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে ঘুমানো সবচেয়ে উপকারী। এ সময় শরীরের শক্তি কিছুটা কমে যায় এবং ঘুম শরীরকে রিচার্জ করতে সাহায্য করে।
৩. পরিবেশ তৈরি করুন:
শান্ত, অন্ধকার ও আরামদায়ক জায়গায় ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
দুপুরে ঘুমানো শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়। তবে এটি হতে হবে নিয়ন্ত্রিত এবং সংক্ষিপ্ত। নিয়ম মেনে যদি দুপুরের ঘুমকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করা যায়, তবে এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অতিরিক্ত ঘুম এবং অনিয়মিত অভ্যাস এড়িয়ে চললে দুপুরের এই বিশ্রাম হবে শরীরের জন্য আশীর্বাদ।
আ. দৈ/ আফরোজা