ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একদিনে ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ হামলার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনিরা।
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে অবস্থিত একটি পোস্ট অফিসে আশ্রয় নিয়েছিল উদ্বাস্তু কয়েকটি পরিবার। ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ওই হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হন এবং আরও ৫০ জন আহত হন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম এই হামলাকে ‘বর্বর ও জঘন্য গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই একই পরিবারের সদস্য বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, হামলায় পোস্ট অফিস ছাড়াও আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুদের দেহে ধুলা ও রক্ত লেগে থাকার করুণ দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৪ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৮৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মানবিক সহায়তা বহনকারী ট্রাক পাহারার দায়িত্বে থাকা কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে হামাস ও গাজায় কর্মরত চিকিৎসাকর্মীরা।
হামাস দাবি করেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় মানবিক সহায়তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত অন্তত ৭০০ জন কর্মী ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। হামাসের মতে, মানবিক সহায়তা লুটপাটের অভিযোগ তুলে এসব কর্মীদের টার্গেট করছে ইসরায়েলি বাহিনী, যা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ভাষ্য ভিন্ন। তারা দাবি করেছে, নিহতরা হামাসের যোদ্ধা ছিলেন, যারা মানবিক সহায়তা সরবরাহে লুটের চেষ্টা করছিলেন। তবে নুসেইরাত পোস্ট অফিসে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি বাহিনী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, গাজার কেন্দ্রস্থলের কিছু এলাকাকে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তাদের দাবি, এসব এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর রকেট হামলা চালানো হয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, রকেট হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ওই এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই হামলাগুলো ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করছে।
আ. দৈ./ সাধ