গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৫৮টি দেশ। তবে যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ৮টি দেশ।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, প্যারাগুয়ে, টোঙ্গা, পাপুয়া নিউ গিনি, নাউরু এবং চেক প্রজাতন্ত্র। এর মধ্যে আর্জেন্টিনার বিরোধিতার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।
জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাবে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে, শর্তহীন এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে গাজায় আটক ইসরাইলি বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাবগুলো আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হলেও বৈশ্বিক রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এসব প্রস্তাব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান প্রতিফলিত করে।
যুদ্ধবিরতির পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো অবস্থান না নিয়ে ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে এ ধরনের নিরপেক্ষ অবস্থান নতুন কিছু নয়, তবে এতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাজনৈতিক কৌশল প্রতিফলিত হয়।
গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং আহত হন আরও ৬৯ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি অভিযান চলাকালে এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৮০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৭ জন।
হামাসের আকস্মিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযানে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ অসংখ্য স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় গাজার অবকাঠামো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, যার ফলে সেখানকার মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়ছে। ১৫৮টি দেশের সমর্থন এ ইস্যুতে বৈশ্বিক সংহতির প্রতিফলন ঘটায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের বিরোধিতা এবং কিছু দেশের ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছে।
জাতিসংঘে গৃহীত যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির পক্ষে সাধারণ মানুষের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
আ. দৈ./সাধ