রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসার ভিতরে ঢুকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় সীমা আক্তার (২২) ও তার গর্ভে থাকা ৭ মাসের সন্তান মারা গেছে।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সীমা ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী শহিদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে নিহতের বাবার বাসায় ঘটনাটি ঘটে।
মৃত সীমার ভাই মো. নাসির বলেন, সীমা তার স্বামী জুয়েলকে নিয়ে শহীদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে আমাদের বাসার কাছাকাছি একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতো। সীমার আবির (৪) নামে আরো একটি সন্তান রয়েছে। জুয়েল যাত্রাবাড়ী মোড়ে ফলের ব্যবসা করে। মাঝেই মাঝেই আমাদের বাসায় আসতো তারা। ঘটনার সময় সীমা আমাদের বাসায় ছিল।
তিনি আরও বলেন, গত রাতে এক যুবক ছুরি হাতে তাদের বাসার প্রবেশ করে। সে সময় সীমা ও তার চার বছরের সন্তান বাসায় ছিল। ওই যুবক কিছু না বলেই ছুরি নিয়ে সীমার দিকে তেড়ে যায়। তখন সীমা বলে আমাকে মারবেন না আমার পেটে সন্তান আছে। সীমার কথায় কর্ণপাত না করে, যুবকটি তার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তবে ওই যুবককে চিনতে পারেনি সীমা। সীমা মৃত্যুর আগে আমাদের এসব কথা জানিয়েছে।
পরে সংবাদ পেয়ে রাতেই সীমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন রাতেই সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা সীমাকে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। সীমার ছেলে সন্তান হয়, তবে বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। তখন চিকিৎসকরা নবজাতকটিকে আইসিইউতে নিতে বলে। এর কিছুক্ষণ পরেই নবজাতকটি মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজকে মারা যায় সীমা।
সীমার স্বামী মো. জুয়েল বলেন, আমাদের কোনো শত্রু নেই। কেন আমার স্ত্রী সন্তানকে মেরে ফেলল। আমার স্ত্রী বারবার বলছে- আমার পেটে বাচ্চা আছে, আমাকে মেরো না। তবুও আমার স্ত্রীকে ছাড়েনি। আমি এর বিচার চাই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে ছুরিকাঘাতে আহত এক অন্তঃসত্ত্বাকে ভর্তি করে স্বজনরা। রাতেই সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হয়, তবে শিশুটি মারা যায়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেলে মারা যায় নবজাতকের মা সীমা আক্তার। তার পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।