রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় মিরহাজীরবাগ এক বাসায় চুরি করতে গিয়ে জনতার গণধোলাইয়ে মারা গেছে বাপ্পি নামের এক যুবক। আর এ ঘটনাটিকে উল্টো হত্যা মামলা সাজিয়ে যে বাসায় চুরি হয়েছে সেই বাসার লোকজনকে আসামী করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলার হুকুমের আসামী করা হয়েছে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকাকে। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। গত ১২ নভেম্বরের এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মিরহাজীরবাগ এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা ফৌজিয়া রওশন ওরফে প্রীতি। গত ১১ নভেম্বর প্রীতির বাসার জানালার পাশে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ চুরি হয়। ব্যাগে মোবাইল ফোন, মুল্যবান জিনিষপত্রসহ বেশকিছু টাকাও ছিল। ঘটনাটি আশপাশের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে স্থানীয়রা চোর সন্দেহে বাপ্পি নামের এক যুবককে তার বাসা থেকে ডেকে এনে জিজ্ঞসাবাদ করে। এসময় স্থানীয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক এসে বাপ্পিকে বেদম মারপিট করে রাস্তায় ফেলে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। এ ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে একটি চক্র প্রীতিকে হুকুমের আসামী ও প্রীতির ছেলে ইনানকে ২ নম্বর আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করায়। মামলার বাদী নিজে পড়ালেখা জানেন না। এ সুযোগে ওই চক্রটি বাদীর স্বাক্ষর নিয়ে মামলা দায়ের করায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। এ মামলায় প্রীতিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরাও ঘটনাটি নিয়ে হতবাক হয়েছেন। তারা বলছেন, প্রকৃত ঘটনা এখনো জানা যায়নি। তবে মারপিটে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারা। অন্যদিকে মামলার বাদীর সরল স্বীকারোক্তি- তিনি জানেন না কাদের আসামী করা হয়েছে। প্রীতি ও তার ছেলের সম্পর্কে বাদীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রীতি ও তার ছেলে ইনানকে ফাঁসানোর জন্য যদি মামলায় যুক্ত করা হয় তা অন্যায় করা হয়েছে। আমার ছেলের হত্যা মামলায় কোন নিরপরাধ লোক যেন শাস্তি না পায়। বাদীর ছেলে হত্যার প্রকৃত আসমীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন। প্রীতিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন।
আ. দৈ./কাশেম/ ইমু