সরকারি চাকুরীজীবীদের উদ্দেশ্য করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (তদন্ত) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, নিজের বিবেক কারো কাছে লিজ দিবেন না এবং নিজের দপ্তর দুর্নীতিমুক্ত রাখুন। ব্যক্তিগত লোভ-লালসা পরিহার করে অন্যকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না। তিনি বলেন, এখন আপনাদের মাথায় রাজনৈতিক নেতা বড় ভাইয়ের হাত আছে। এক সময় এসব বড় ভাই থাকবে না।
আজ রোববার (৯ নভেম্বর) পঞ্চগড়ে ৪২টি সরকারি দপ্তর সংস্থার বিরুদ্ধে ১১৮ অভিযোগের শুনানির মাধ্যমে দুদকের ১৮৯তম গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজকের অনুষ্ঠানে দুদকের সর্বোচ্চ অভিযোগের গণশুনানি হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঠাকুরগাঁও আয়োজিত পঞ্চগড় জেলা সরকারি অডিটোরিয়ামে এ গণশুনানি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদকের কমিশনার সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দ্যেশে বলেন, সবার মধ্যে নীতিবোধ জাগ্রত করতে হবে, এখন আপনার মাথায় রাজনৈতিক নেতা বড় ভাইয়ের হাত আছে। মনে রাখবেন আপনি সরকারি চাকুরীজীবী। নিজের বিবেক কারো কাছে লিজ দিবেন না। নিজ দায়িত্বে নিজ নিজ দপ্তর দুর্নীতিমুক্ত রাখুন। ব্যক্তিগত লোভ-লালসা পরিহার করতে হবে, অন্যকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সরকারি সেবা প্রাপ্তি গণশুনানির মুল লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো আক্তার হোসেন সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, দুর্নীতি করার আগে একশত বার ভাবুন, আপনি সরকারি কর্মকর্তা, আপনার বিরুদ্ধে একটা মামলা হলে আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের কি দুর্বিষহ সময় অপেক্ষা করছে আপনি ভাবতেও পারছেন না।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মুন্সী, পঞ্চগড় জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. মো খালিদ তৌহিদ এবং দুদকের বিভাগীয় কার্যালয় রংপুরের পরিচালক মোহাং নুরুল হুদা বক্তৃতা করেন।
আজকের অনুষ্ঠানে গণশুনানিতে ৪২টি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে দুই শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে দুদকের তফসিলভুক্ত ১১৮টি অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ০২টি অভিযোগের বিষয়ে দুদকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু'জন প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দু'জন শিক্ষককে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত এবং বাকী অভিযোগগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া হয়।
আ. দৈ./কাশেম