রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের আশুলিয়ায় গত বছর ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট গুলিকরে হত্যার পর ৬ মরদেহ পোড়ানো এবং ৪ আগস্ট একজনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের শুনানি হয়েছে। তবে এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আগামী ২১ আগস্ট চার্জ গঠনের আদেশ জারির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অভিযোগ গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল–২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ সংক্রান্ত বিষয়ে আদেশের দিন ঠিক করেছেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, সাইমুম রেজা তালুকদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
এর আগে সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট ছয় মরদেহ পোড়ানো এবং ৪ আগস্ট একজনকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়। এরপর আসামিপক্ষের শুনানির জন্য ১৩ আগস্ট দিন ঠিক করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আসামিপক্ষের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিন সকালে মামলার মোট ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেফতার আটজনকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল হোসেন ও কনস্টেবল মুকুল।
এর আগে গত ২৮ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আজকের দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়। এরও আগে ২ জুলাই এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনায় করা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির পর প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর লাশগুলো পুলিশভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজনকে জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
এর আগের দিন ৪ আগস্ট একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোট ৭ জনকে হত্যা ও ছয়জনের মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে।
আ. দৈ./কাশেম