বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫,
৩০ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
জাতীয়
ভাইরাল হয়েই সর্বনাশ, ফুটপাতের সেই হোটেল মালিকের এখন শুধুই হাহাকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Wednesday, 13 August, 2025, 7:56 PM  (ভিজিট : 45)

ঢাকার এক ব্যস্ত ফুটপাতের পাশে ছোট্ট এক ভাতের হোটেল। নেই কোনো কর্মচারী, নেই ব্যবস্থাপনার ঝক্কি—সবকিছু একাই সামলান মিজানুর রহমান মিজান। নিজেই রান্না করেন, নিজেই খাবার সাজিয়ে রাখেন। 

আর খেতে আসা মানুষজন যে যার মতো খাবার নিয়ে খেয়ে, টাকা রেখে চলে যান একপাশে রাখা একটি প্লাস্টিকের কৌটায়। কারও কাছে টাকা না থাকলে, কিছু না দিয়েই চলে যাওয়ারও অনুমতি রয়েছে। সব মিলিয়ে এ যেন এক বিশ্বাসের হোটেল।

এই মানবিক উদ্যোগ ভাইরাল হলো হঠাৎ করেই। আর তাতেই যেন সব উল্টে গেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মাত্রই মানুষের ঢল নামে মিজানের হোটেলে। হঠাৎ বাড়তে থাকা ভিড়ে যেমন কাস্টমার বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে অযাচিত সুযোগ নেওয়ার প্রবণতা। কেউ খাবার নিয়ে টাকা না দিয়ে চলে যাচ্ছে, কেউ তিন-চার পিস করে গরুর মাংস তুলে নিচ্ছেন কিন্তু দিচ্ছেন মাত্র ২০-৩০ টাকা।

মিজান বলেন, “ভাত কিন্তু ঠিক মতো খায় না। গোশত বেশি নেয়। আমি এক ব্যাগ গোশত পাক করি—১০ কেজি, অথচ টাকায় ওঠে মাত্র ১ হাজার।”
মিজানের অভিযোগ, ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কারণে তার দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। রান্না করার সময়টাতেই চলে যায় সাক্ষাৎকারে। “খাবারও বানাতে পারি না, মানুষও ঠিকমতো খেতে পারে না। ক্যামেরা-ক্যামেরা করতে করতে দোকানই শেষ হয়ে গেল।"

ভাইরাল হওয়ার আগেও প্রতিদিন ১২০০ টাকা মতো বিক্রি হতো। এখন ৫০০ টাকাও ওঠে না। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের চাপ, ফুটপাথ থেকে হোটেল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে তাকে।

মিজান হতাশ কণ্ঠে বলেন, “আমি তো জানতাম না ভাইরাল কি জিনিস। যদি জানতাম এমন হবে, তো ক্যামেরার সামনে কখনোই আসতাম না।”
ক্যামেরার সামনে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেন না তিনি। কথার ফাঁকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বললেন, “মানুষ যেমন, মিডিয়াও তেমন। আমার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে সবাই। ব্যবসা নাই, সংসার চলছে না। স্ত্রীও আমাকে ঠিকমতো দেখতে পারেন না। মাগরিবের আগেই ঘরে চলে যেতে হয়। মাথার ওপর এত চাপ—মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি।”

হৃদয়বান মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার আশায় ভাইরাল হয়েছিলেন মিজান। কিন্তু সেই ভাইরালই যেন এখন তার জীবনের সবচেয়ে বড় বোঝা। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ, মাইক্রোফোন আর দর্শকের ভিড়ে এখন নিঃস্বপ্রায় সেই ফুটপাতের ‘বিশ্বাসের হোটেল’। শেষ কথায় মিজানের শুধু একটাই অনুরোধ- “আমি কিছু বলব না কাউকে। শুধু আমার ব্যবসাটা নষ্ট কইরেন না ভাই।”

আ.দৈ/আরএস


   বিষয়:  ভাইরাল   হয়েই   সর্বনাশ   ফুটপাতের   সেই   হোটেল   মালিকের   এখন   শুধুই   হাহাকার  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সাবেক তিন গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব
জিএম কাদের দলীয় কার্যক্রমের অনুমতি পেয়েছেন
কুয়েতে বিষাক্ত মদ পানে ১০ প্রবাসীর ‍মৃত্যু
দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি জানে না: ডা. জাহিদ
প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিএসসিসিতে শ্রমিক দলের ৩ গ্রুপ মুখোমুখি, সংঘর্ষের আশঙ্কা ; প্রশাসকের চেয়ারে বসে কর্মচারীর ফেসবুকে পোস্ট
খেলাফত না গণতন্ত্র : সুশাসনের প্রকৃত পথ কোনটি?
হাসিনার পক্ষে লড়তে জেড আই খান পান্নার আবেদনে ট্রাইব্যুনাল বললেন, ‘আপনি ট্রেন মিস করেছেন’
৯ পুলিশ পরিদর্শককে বাধ্যতামূলক অবসর ও পলাতক ৪০ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার
৩৬ দিনের আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের পতন হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
জাতীয়- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝