ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের বিতর্কিত শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের ৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের সুনিদিষ্ট অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। দুদকের এই মামলায় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনিরুল মওলাকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া এস আলম, ইসলামী ব্যাংক ও নাবিল গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তারাও আসামি হয়েছেন।
দুদকের ডিজি আরো বলেন, মামলার এজাহার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় না করে মোট ৯৫০ কোটি টাকার ভুয়া ডিল সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র তৈরি করেন। আসামিরা তা ব্যবহার করেন, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অপরাধমূলক অসদাচরণসহ নানান ব্যাংকিং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বাই-মুরাবাহা টিআর বিনিয়োগ প্রস্তাবনা, সুপারিশ, অনুমোদন, বিতরণ ও উত্তোলন করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এস আলম ও নাবিল গ্রুপ সংশ্লিষ্টদের সাপ্লায়ার ও বেনফিশিয়ারি হিসেবে দেখিয়ে ভুয়া ঋণ সৃজন করা হয় বলে এজাহারে বলা হয়।
অর্থের উৎস ও প্রকৃতি গোপন করার জন্য স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ করায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি (১৮৬০) এর ৪০৯/ ৪২০/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) এবং ৪(৪) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমানে ওই বিনিয়োগ ঋণটি মন্দ ঋণ হিসেবে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় শ্রেণিকৃত করা হয়েছে। মামলায় নাবিল গ্রুপের আসামিরা হলেন- নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যানের আত্মীয় ও মার্কেট মাস্টার অ্যানালাইজারের চেয়ারম্যান মো. শরিফুল ইসলাম, এমডি মো. শাহ আলম, নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান শিমুল এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. আমিনুল ইসলাম ও নাবিল ট্রেডিংয়ের কর্ণধার ইসরাত জাহান।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনিরুল মওলাসহ প্রতিষ্ঠানটির আরও যারা আসামি হয়েছেন তারা হলেন- ব্যাংকটির ইভিপি মো. মোজাহিদুল ইসলাম, এভিপি মোহাম্মদ কাইয়ুম শিকদার, মো. কামরুজ্জামান, মো. জহিরুল হক, এফএভিপি মো. আব্দুল কাইয়ুম, মো. আলমগীর হোসেন, ডিএমডি মাহমুদুর রহমান, সাবেক এসভিপি মো. নাজমুল হূদা সিরাজী, ভিপি মো. মমতাজউদ্দিন চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) মিফতাহ উদ্দিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান, এসইভিপি মোহাম্মদ শাব্বির ও মোহাম্মদ উল্লাহ।
এছাড়া তৎকালীন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম উদ্দিন, সৈয়দ আবু আসাদ (প্রতিনিধি এক্সিলেসর ইমপেক্স কোম্পানি লিমিটেড), ড. তানভীর আহম্মদ (প্রতিনিধি প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড), মো. কামরুল হাসান (প্রতিনিধি গ্রান্ড বিজনেস লিমিটেড), প্রফেসর ড. মোহা. ফসিউল আলম ও জেকিউএম হাবিবুল্লাহ। এস আলমের যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের এমডি মো. শহিদুল ইসলাম ও মিশকাত আহমেদ। আলম সুপার এডিবল অয়েলের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস ও এস আলমের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের স্ত্রী ফারজানা পারভীন।
আ. দৈ./কাশেম