ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার নিদের্শনার আলোকে ‘নগর ভবনসহ’ ১০ টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে ‘টপ টু বটম’ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন। একই সাথে নগর ভবন থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডিজিটাল পদ্দতিতে আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঠে-ময়দানে কাজের মনিটরিং করা হয়েছে।
বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগের জীবানুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পরিচ্ছন্ন ও মশক নিধনে প্রয়োজনী (লার্ভিসাইডিং) ওষুধ ছিটানো এবং উড়ন্ত মশা মারতে ফগিং কার্যক্রম জোরদারের বিষয়টি নজরে আনা হয়েছে। এছাড়া নগরীতে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের সর্বশেষ অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করে পরামর্শসহ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য জানানো হচ্ছে মনিটরিং সেলকে।
আজ শুক্রবার (২৭ জুন) ঢাকা দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান এই প্রতিনিধিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, আজ শুক্রবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রতিটি মসজিদে জুমার নামাজের খুতবার আগে ইমাম সাহেবের মাধ্যমে নগরবাসী সহযোগতা চাওয়া হয়েছে। আগামীকাল শনিবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটির সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিস করবেন।
কারণ বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থনে অসহযোগ আন্দোলনের কারণে টানা ৪৩ দিন হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেডলাইন্সসহ রাজস্ব আদায় বন্ধ ছিল। যারফলে রাজস্ব বিভাগের ‘টপ টু বটম’ সবাইকে রাজস্ব আদায়ের কাজের বিশেষ নজর দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসকের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে স্বঘোষিত ডিএসসিসির মেয়র বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থনে বহিরাগতদের সাথে নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের কিছুু কর্মকর্তা ও কর্মচারী অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা অতি উৎসাহী হয়ে নগর ভবন ৬৫টি তালামেরে ছিল। তারা নিজেরা অফিসের কাজ করেননি এবং আন্দোলনের বাইরে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও কাজ করতে দেননি। এইভাবে কেটেগেল টানা ৪৩ দিন। ফলে সব ধরনের নাগরিক সেবা প্রদান ও উন্নয়নমূলক চলমান কাজ বন্ধ ছিল । একই সাথে রাজস্ব আদায় শূন্যেও কোটায় নেমে এসেছে। এই অসহযোগ আন্দোলনের ফলে ডিএসসিসিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি,পুরো নগরবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর দেড়টায় প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া ডিএসসিসির নগর ভবনে ফিরে আসছেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পুনরায় কাজ শুরর নির্দেশ দেন। একই সাথে শুক্রবার ও শনিবার সবাইকে কাজ করার জন্য অফিস আদেশ জারি করেন। বর্তমানে ডিএসসিসিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে কাজের প্রাণ ফিরে এসেছে। কেটে যাচ্ছে হতাশা, ক্ষোভ। একই সাথে বন্ধ হচ্ছে, বহিরাগতদের হুমকি ও অবৈধ তদবির বাণিজ্য। কর্মকর্তারা পাবেন কাজের পূর্ণ স্বাধীনতা, এমনটা ধারনা করা হচ্ছে।
দলের অনুমতি ছাড়া সরকারি দফতরে আন্দোলনকারীরা বিএনপির নয়: রিজভী
এদিকে আজ শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত রথযাত্রা উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্পষ্টভাষায় বলেছেন, দলের অনুমতি ছাড়া সরকারি দফতরে আন্দোলনকারীরা বিএনপির নয়। তাদের অপরাধের দায়ভার বিএনপি নেবেন না।
তিনি বলেন, নিজেদের ফায়দা আদায়ের জন্য ইনকাম ট্যাক্সে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটি সুবিধাভোগী চক্র আন্দোলন করছে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দলের অনুমতি ছাড়া বিএনপির নামে সরকারি দফতরে কেউ আন্দোলন করলে এ দায় বিএনপির না, বিএনপি এসব আন্দোলন সমর্থন করে না। ইনকাম ট্যাক্সে বিএনপির নামে যারা আন্দোলন করছে তারা বিএনপির কেউ না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রক্ত ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাতে সামনের দিনে ভালো রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হবে।
সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে, হাসিনার আমলে সব নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’ সংস্কার করে দ্রুত নয়, যৌক্তিক সময়ে সরকার নির্বাচন দেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রিজভী।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, গত ১৪ মে থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে স্বঘোষিত ডিএসসিসির মেয়র বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থনে বহিরাগতদের সাথে নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের কিছুু কর্মকর্তা ও কর্মচারী অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ৪৩ টদিন নগর ভবনে ৬৫টি তালা ঝুঁলিয়ে রেখেছে। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানকে অচলকরার আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কিংবা ঢাকা মহানগর কমিটির অনুমোদন ছিল কি না।
আ. দৈ./কাশেম