ভাষা
মানুষের এক চিরন্তন আবেগের নাম। আবার মানুষের আবেগ-অনুভূতির সার্থক
বহিঃপ্রকাশ ঘটে ভাষার মাধ্যমে। ভাষার মৌখিক রূপের সাধারণত দুটি দিক থাকে
প্রমিত ও আঞ্চলিক। আঞ্চলিক ভাষা বিকৃতি নয়, বৈচিত্র্য আনে।
রোববার
(২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় বাংলাদেশ
প্রেসক্লাব-ইউএইর উদ্যোগে ‘মায়ের ভাষায় কথা বলি’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্যে দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন
এসব কথা বলেছেন।
কনসাল
জেনারেন বলেন, একটি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মুখের কথায় সে ভাষার অনেক আঞ্চলিক
রূপ পরিলক্ষিত হয়। অঞ্চলভেদে এ রূপগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রতিটি অঞ্চলের
ভূপ্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে কালক্রমে গড়ে ওঠে সেখানকার
আঞ্চলিক ভাষা।
তিনি
আরও বলেন, মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা জাতির কাছে ভাষা গুরুত্বপূর্ণ
হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এই ভাষা দূরপরবাসে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের কাছে যারা
পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব একটি মহৎ কাজ
করেছে৷ তা ছাড়া আঞ্চলিক ভাষায় যে বৈচিত্রতা তারা তুলে ধরেছে এটিও প্রশংসনীয়
কাজ।
এসময়
তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের দুবাই ও উত্তর আমিরাতে আন্তর্জাতিক
মানের একটি বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও শিশুকিশোরদের জন্য বাংলা ভাষা
চর্চা কেন্দ্র চালু করতে বাস্তবমুখী ও সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান।
শিবলী
আল সাদিকের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান জনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো
বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বিজ্ঞানী রেজা খান, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব
(প্রেস) আরিফুর রহমান, শারজা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমেদ হোসাইন ও
বাংলাদেশ সমিতি দুবাইয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি ইয়াকুব সুনিক, বাংলাদেশ সমিতি
শারজার সহ সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। এসময় শারজাহ
বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধিনস্থ ১১ টি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত
ছিলেন।
এর
আগে অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা চর্চায় উৎসাহিত করতে ও আঞ্চলিক ভাষার মর্যাদা
রক্ষায় বিশেষ পর্ব পরিচালনা করায়। যেখানে দেশের আটটি বিভাগের আঞ্চলিক
ভাষাসহ প্রায় বিলুপ্ত উপভাষায় নিজ অঞ্চলের ভাষার বৈচিত্র্য ও আর্থ-সামাজিক
প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রবাসীরা। এতে ঢাকার কুট্টি ভাষায় রেজা খান,
চাটগাঁইয়া ভাষায় মোস্তফা মাহমুদ, সিলেটি ভাষায় হাজী শফিকুল ইসলাম, রংপুরী
ভাষায় স্নিগ্ধা সরকার তিথী, মোমেনশিঙ্গা ভাষায় উত্তম কুমার সরকার,
বরিশাইল্যা ভাষায় সাথী আক্তার প্রিয়া, খুলনাইয়া ভাষায় শাহীদ ইসলাম,
বরেন্দ্রী উপভাষায় সানজিদা আঞ্জুম শিমুল ও নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কামাল
হোসাইন সুমন নিজের অঞ্চলকে তুলে ধরেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন
কবি জামাল হোসেন, আবিদা হোসেন, শিবলী আল সাদিক, এস এম শাফায়েত, রাহবার
আবদুল্লাহ শিবলী, রুহিন হোসেন ও সাকিয়া সিদ্দিকা জেরিন।