বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। আজ শনিবার (১৪ জুন) নির্বাচনী বোর্ড বিজিএমইএ পর্ষদ ২০২৫-২৭ সেশনের জন্য কার্যনির্বাহী পদ বণ্টন সম্পন্ন করে। নির্বাচিত পরিচালকরা বিজিএমইএর সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের জন্য ভোট দেন।
এরআগে গত ৩১ মে পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন, দেশের অর্থনীতিতে অন্যতম চালিকা শক্তি সারাদে ব্যাপক কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টিকারীদেরর বৃহৎ সংগঠন বিজিএমইএ’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিজিএমইএ ২০২৫-২৭ মেয়াদের জন্য সহ-সভাপতি (প্রথম) নির্বাচিত হয়েছেন সেলিম রহমান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইনামুল হক খান।
আজ শনিবার নির্বাচনী বোর্ডের সভায় মাহমুদ হাসানকে সংগঠনটির ২০২৫-২৭ মেয়াদের জন্য সভাপতি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টসহ আরও ৫ ভাইস প্রেসিডেন্টের নামও ঘোষণা করা হয় আজ। এর ফলে মোট ৮ সদস্যের নতুন বোর্ড পেল বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ নির্বাচনী বোর্ড থেকে দেওয়া ২০২৫-২৭ মেয়াদের কার্যনির্বাহী পর্ষদের যে তালিকা প্রকাশ করে তাতে মাহমুদ হাসান খান বাবুকে সভাপতি, সেলিম রহমানকে প্রথম সহ-সভাপতি, ইনামুল হক খানতে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মো. রেজওয়ান সেলিমকে সহ-সভাপতি, মিজানুর রহমানকে সহ-সভাপতি (অর্থ), ভিদিয়া অমৃত খানতে সহ-সভাপতি, মো. মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে সহ-সভাপতি এবং মোহাম্মদ রফিক চৌধুরীকে সহ-সভাপতি নিহাবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এই নতুন পর্ষদের আগামী ১৬ জুন দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ৩১টি পদে জয়ী হয়েছে ফোরাম। আর সম্মিলিত পরিষদ জয়ী হয়েছে ৪টি পদে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদ একটি পদেও জয়ী হতে পারেনি। সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট- ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল। ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিলেও ঐক্য পরিষদের প্রার্থী ছিল ছয়জন। ফলে সব মিলিয়ে প্রার্থী ছিলেন ৭৬ জন।
নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল দলনেতা রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা ছিলেন চৈতি গ্রুপের এমডি মো. আবুল কালাম। ঐক্য পরিষদের দলনেতা ছিলেন রোমো ফ্যাশন টুডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন। এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। তার মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ ইকবাল। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন- সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আশরাফ আহমেদ।
নির্বাচনে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৪৯টি ভোট পেয়েছেন ফোরামের দলনেতা মাহমুদ হাসান খান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ১২৩ ভোট পেয়েছেন ফোরামের প্রার্থী শাহ রাঈদ চৌধুরী। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৬ ভোট পেয়েছেন ফোরামের আরেক প্রার্থী মিজানুর রহমান। আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৮ ভোট পেয়েছেন ফোরামের প্রার্থী সেলিম রহমান।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চে বিজিএমইএ’র নির্বাচন হয়েছিল। তাতে সম্মিলিত পরিষদ সব পদে জয়ী হলেও নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তখন সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। এরপর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাকে আর দেখা যায়নি। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আ. দৈ./কাশেম