জাতীয় নির্বাচনকালীন সময় বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত হলে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকবে না বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ সোমবার (৯ জুন) দুপুরে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গীমোড়ে একটি টং দোকানে চা-চক্র শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে যদি দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম দেখা যায়, মৌলিক বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয় এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার নিশ্চিত হয়, তাহলে নির্বাচন নিয়ে বিরোধিতার সুযোগ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে এসব সংস্কার নিশ্চিত করতেই হবে। কেউ যেন ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার না হয়—এটি নিশ্চিত করাও জরুরি। অতীতে আমরা দেখেছি, নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহার, কালো টাকার প্রভাব ও পেশিশক্তির দাপট ছিল। ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট চুরি। এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা একটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ চাই, যেখানে ছোট দল হোক বা বড় দল—সবাই সমানভাবে অংশ নিতে পারবেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা শুনেছি, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশে এসেছেন। আমাদের দৃষ্টিতে অন্তর্বর্তী সরকার একটি অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার, যারা সেই ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর ছিল, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে এবং আইনগত প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রকাশিত নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধনের আবেদনের প্রক্রিয়া জুন মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে সারাদেশে ১০০টি উপজেলা এবং ২২টি জেলায় কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। এখন অফিস নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। নির্ধারিত নিয়ম মেনেই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করব।
অফিসিয়ালি এই সফর না হলেও সাংগঠনিক কার্যক্রমের জন্য এটি তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করেন সারজিস আলম।
এদিন সকালে হাসনাত আব্দুল্লাহ ঢাকা থেকে বিমানে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান। এসময় সারজিস আলম নিজেই পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর নিজ বাড়ি থেকে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে তাকে রিসিভ করেন। এরপর সড়কপথে দেবীগঞ্জ উপজেলার বিজয় চত্বর, বোদা উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গীমোড়ে চা-চক্রে অংশ নেন। পরবর্তীতে সারজিস আলমের পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তারা আটোয়ারী উপজেলার উদ্দেশে রওনা হন।
আ. দৈ./ কাশেম