শনিবার (৩০ মে) বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির জাতীয় কাউন্সিল ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ব্যারিস্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ সালেহউদ্দিনের ৪২তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং দলের মহাসচিব মানসুর আলম সিকদারের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় আমন্ত্রিত জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক এলডিপি'র কেন্দ্রীয় নেতা লেঃ জেনারেল (অবঃ) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বীর বিক্রম, গণদল চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আমিন, বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ ইকরামুল হক খান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের অতিরিক্ত মহাসচিব লায়ন আলহাজ্ব আকবর হোসেন পাঠান, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন অর রশীদ, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএম ফয়েজ হোসেন, মুসলিম লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ এ সবুর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন দলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, মহাসচিব জনাব মানসুর আলম সিকদার, ময়না বেগমসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তারা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজ নিজ দলের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে সবকিছুর ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রাখার আহবান জানান। বক্তারা আরো বলেন, সংস্কার,বিচার এবং নির্বাচন কোনোটাই উপেক্ষা করা সম্ভব নয়, উচিতও নয় এবং সংকটের শান্তিপূর্ণ উত্তরণে ধৈর্য হারানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন। বক্তারা ভুল বোঝাবুঝি ও কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি ত্যাগ করে জাতীয় স্বার্থে সমঝোতা এবং সংকট উত্তরণে দ্রুততম সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।কাউন্সিলের দ্বিতীয় পর্বে কয়েকটি বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।
১। পূর্ব ঘোষিত কার্যনির্বাহী কমিটিকে আগামী দুই বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। ২। চেয়ারম্যান, নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবসহ ৮ বিভাগের ৮জন ভাইস চেয়ারম্যান সহ মোট ১১সদস্যের জাতীয় নীতি নির্ধারনী কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিতর্কের সৃষ্টি হলে নীতি নির্ধারনী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্তই সঠিক বিবেচিত হবে।
৩। গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, মহাসচিব মানসুর আলম সিকদার এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এসএম মামুনুল; এই তিন সদস্যের সাব কমিটি গঠন করা হয়। এই সাব কমিটি গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে চেয়ারম্যানের অনুমোদন সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত অনুমোদন করবে। আগামীতে এই কমিটি গঠনতন্ত্রকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ সময়োপযোগী নিয়মতান্ত্রিক বিধানে পরিণত করার জন্য কাজ করবে। গঠনতন্ত্র উন্নয়নে যদি কারো কোন পরামর্শ থাকে তা "গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি"র কাছে জমা দিতে হবে।
৪। দলে সাংগঠনিক ও প্রচার কার্যক্রমে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং আগামীতে নানাধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ড নিয়ে নতুন ধরনের আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচি ও কার্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৫। সকল প্রস্তাব ও সংশোধনী জাতীয় নীতি নির্ধারণী কমিটির সভায় গ্রহণ বা বর্জন করা হবে। তবে চূড়ান্তভাবে পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিলে অনুমোদন লাভ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ব্যারিস্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন এবং আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেন এবং একাধিকবার কারাবরণ করেন।
১৯৭০ সালে ফরিদপুর-২ এলাকা থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাসিত হন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ১৯৭২ সালে গন পরিষদ সদস্য এবং ১৯৭৩ সালে ১ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন। সংসদে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ সৈয়দ কামরুল ইসলাম ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি প্রতিষ্ঠা করে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের কার্যক্রম শুরু করেন।
ওয়ান ইলেভেনের পর আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারসহ এর আগে বিগত ৩টি সরকার বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির নিবন্ধন দেয়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি নতুন ভাবে ঢেলে সাজানো হয় এবং নিবন্ধনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
আ. দৈ./ কাশেম/ এস রহমান