লালমনিরহাটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৫৫ জনকে পুশইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয়দের বাধায় তারা এখন অবস্থান করছে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের ভারতীয় অংশে। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকাগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আজ বুধবার ভোরে লালমনিরহাটের আদিতমারী পাটগ্রাম, ও হাতীবান্ধাউপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে একযোগে তাদেরকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়।
বিজিবি ও সীমান্তবর্তী স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের পূর্ব আমঝোল সীমান্তে ৯০৭নং সীমান্ত পিলারের ৪নং সাব-পিলার দিয়ে আজ ভোরে ৮ জন ও একই উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সীমান্ত দিয়ে ১৬ জন ভারতীয় নাগিরককে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো চেষ্টা করে বিএসএফ।
একই সময় আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে ও পাটগ্রাম উপজেলার দুই সীমান্ত দিয়ে ২০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা করা হয়। কয়েকজন পালিয়ে গেলেও অধিকাংশদের সীমান্তবর্তী স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আটক করে বিজিবি। তবে পালিয়ে যাওয়াদের আটকের চেষ্টা চলছে।
পুশইন করা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সবাই জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক। ভারতের আসাম থেকে কয়েক দিন আগে তাদের আটক করে ভারতীয় পুলিশ।
তবে আটক হওয়া ভারতীয় ৫৫ জন নাগরিক বর্তমানে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের ভারতীয় অংশে অবস্থান করছেন। তাদের ঘিরে রেখেছে বিজিবি ও বিএসএফ।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এলাকায় দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করে গ্রাম পুলিশ। পরে তাদের হাতীবান্ধা থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর বিওপির চওড়াটারী সীমান্তে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের এই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। পরে আবারো আজ দুপুর ২টার দিকে বিজিবি-বিএসএফ’র ব্যাটালিয়ান পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকেও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এ ঘটনার পর থেকে সীমান্তগুলোতে সতর্ক অবস্থানে আছে উভয় বাহিনী। একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। লালমনিরহাট বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী ঈমাম জানান, বিএসএফ পুশইনে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব লোকজন এখন সীমান্তের শুন্য রেখায় রয়েছে, তারা সবাই আসামের নাগরিক। তারা ভারতে প্রত্যাবর্তন করতে চায় এ নিয়ে ভারতীয় বিএসএফ’র সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দফায় দফায় পতাকা বৈঠকও হচ্ছে।