রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম নগরীতে ভবন দূর্ঘটনা হ্রাসের লক্ষ্যে আন্তঃসংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পুরান ঢাকায় তাঁতিবাজার এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে তার সাথে ছিলেন জেলা প্রশাসন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি সহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম সরেজমিন পরিদর্শনকালে নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ, অগ্নি ও ভূমিকম্প সহ ভবন সম্পর্কিত অন্যান্য ঝুঁকি হ্রাসে সচেতনতা বৃদ্ধির টার্গেট নিয়েই সমন্বীতভাবে আন্তঃসংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে রাখেন।
আজ তিনি তাঁতিবাজারের বিভিন্ন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন ও স্থাপনাতে আজকের আন্তঃসংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই পরিদর্শন ওই এলাকার সংকীর্ণ রাস্তা ও কোন ধরনের নকশা না মেনে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ভবনসমূহের দূর্ঘটনা সহনশীলতা নিয়ে সংকিত হন।
রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জায়গা না ছেড়ে নির্মিত ভবনগুলোর প্রায় বেশিরভাগেরই রাজউক অনুমোদিত কোন নকশা পাওয়া যায়নি। পরিদর্শনকালে ভবন নির্মানে ব্যত্যয় থাকায় পূর্বে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকৃত একটি ভবন ঘুরে দেখা হয়। সেখানে একই ভবনে অতি সংকীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সিড়ি পাওয়া যায়। একই ভবনে অননুমোদিত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
ভবনটিতে কোন অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও জরুরী বহির্গমনের জন্য কোন সিড়ি পাওয়া যায়নি। এসময় ভবনে বসবাসকারীগণ বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় স্থাপনের জন্য অনুরোধ করলেও ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যত্যয় সংশোধনের পূর্বে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হবে না বলে কঠোরভাবে জানান রাজউক চেয়ারম্যান। এসময় তিনি ভবনের বাসিন্দাদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে বসবাস না করার ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে পরিদর্শন দল আরও কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ঘুরে দেখেন। একটি ভবনে পিপলস' ক্রেডিট কোওপারেটিভ লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান দেখতে পান যেখানে পর্যাপ্ত অগ্নিনিবারক সামগ্রী ছিলো না। একইসাথে অফিসটিতে অগ্নি বা যে কোন ধরনের দূর্যোগ মোকাবেলায় কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষকে প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন সংক্রান্ত সকল প্রমাণকসহ রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তরে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এছাড়াও একটি ভবনে স্বর্ণের দোকানের পাশাপাশি ব্যাটারির ফ্যাক্টরি পাওয়া যায় যা অগ্নিকান্ডের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। রাজউক চেয়ারম্যান এসময় উক্ত এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন ও তাদের বিদ্যমান ঝুঁকিসমূহ নিয়ে সচেতন করেন।
এসময় তাদের রাজউক ভবনে এসে কীভাবে এই এলাকার ভবনসমূহকে সকল ধরনের ঝুঁকি মুক্ত করা যায় সে প্রসঙ্গে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে ব্যত্যয়সমূহ নিজ উদ্যোগে সংশোধনের জন্য নির্দেশ দেন। একইসাথে ব্যত্যয়কৃত ভবনসমূহের ব্যাপারে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন রাজউক চেয়ারম্যান।
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, "আজকে আমরা এখানে কোন অভিযান চালাতে আসিনি, তাঁতিবাজার এলাকাবাসীকে সচেতন করতে এসেছি। এখানের বেশিরভাগ ভবনেরই রাজউক এর অনুমোদিত নকশা নেই। ভবনগুলো গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। এধরনের ভবনগুলোতে আগুন লাগলে বা ভূমিকম্প হলে অনেক মানুষের প্রাণহানি সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে। আমরা আন্তঃসংস্থার সমন্বয়ে এধরনের ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।" এসময় কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কেউ বসবাস করতে পারবেন না।"
পরিদর্শনকালে আন্তঃসংস্থার প্রতিনিধিগণ ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন রাজউক এর সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) জনাব মোহাঃ হারুন-অর-রশীদ সহ রাজউক এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা বৃন্দ।
আ. দৈ./কাশেম