উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দশম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন শনিবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অধিবেশনের শুরুতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুপ্র্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মহসীন রশিদ কণ্ঠভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন। পার্টিতে তুমুল জননেতা কাজী আবুল খায়ের চতুর্থবারের মতো মহাসচিব পদে বহাল থাকেন। বলা নিষ্প্রয়োজন,২৪ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি এডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি চান। তখন থেকে এডভোকেট মহসীন রশিদ দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট মহসীন রশিদ বলেন, মুসলিম লীগ এই ভূখণ্ডের একমাত্র দল, যারা ক্ষমতায় থাকাকালীন জনগণের জন্য কাজ করেছে। সুষ্ঠূ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা আঁকড়ে থাকেনি। মুসলিম লীগ নেতাদের কেউ দুর্নীতি করেনি। মুসলিম লীগ নেতারা জনগনের জন্য কাজ করতে গিয়ে জমিদার থেকে ফকীর হয়ে গেছেন, কিন্তু অনৈতিক কিছু করেনি। মুসলিম লীগ কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কাজও করেনি। নারী কমিশনে প্রস্তাবিত সুপারিসের মধ্যে উত্তরাধিকার আইন সরাসরি কুরআন বিরোধী বলেও তিনি এসময় মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্বের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুসলিম লীগ ভেঙে আওয়ামী লীগ হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ এমনিতেই মুসলিম লীগের জন্য নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগকে ইমিডিয়েটলি নিষিদ্ধ করা হোক বলেও তিনি এসময় দাবি তোলেন।
মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেন, মুসলিম লীগ বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনপ্রিয় দল। দেশের বেশীরভাগ রাজনৈতিক দলের বর্তমান নেতৃবৃন্দের প্রায় সবাই মুসলিম লীগের উত্তরসূরী। আমরা যদি কোনোদিন ক্ষমতায় যেতে পারি, মুসলিম লীগকে আবার তার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়া হবে ইনশা-আল্লাহ।
অধিবেশন কাউন্সিলে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৩টি ধারায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে। ১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ২০০৯ সালের প্রণীত আইন দ্বারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। পেহেলগামে সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে ভারতের কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করেন রাজনৈতিক নেতারা। নেতৃবৃন্দ এসময় যুদ্বের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সংযম ও শান্তির পক্ষে মত দেন।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দশম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল অবঃ দিদারুল আলম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খাঁনসহ মুসলিম লীগের বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
কাউন্সিল অধিবেশন অন্যান্য দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে এনসিপি, জাগপা, এলডিপি, গণতান্ত্রিক পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
সারাদেশ থেকে দলের পাঁচ শতাধিক কাউন্সিলর মুসলিম লীগের অধিবেশনে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আ. দৈ./কাশেম / এস রহমান