রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫,
১ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার

রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
জাতীয়
আ.লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে দেশে নির্বাচন হবে না
গত ৫ই আগস্ট জনগণ আ’ লীগ নিষিদ্ধের রায় দিয়েছে :নাহিদ
Publish: Friday, 2 May, 2025, 6:41 PM  (ভিজিট : 45)

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম  বলেছেন,আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, গতবছর  ৫ই আগস্টে বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি রায় দিয়েছে। ওই রায়ের ফলে আওয়ামী লীগ এ দেশে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। ফলে জনগণই আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় হচ্ছে- একটি ভোটের মাধ্যমে, অন্যটি রাজপথে তাদের অবস্থান জানান দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। 

নাহিদ আরও বলেন, সংস্কারের কথা সব রাজনৈতিক দলই বলছে। একটি মৌলিক সংস্কারের জায়গায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যার মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা ও ক্ষমতা হস্তান্তর হতে পারে। তা পরিবর্তন না হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে না।

 শুক্রবার (০২ মে) বিকাল তিনটায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এলাকায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও শেখ হাসিনার সরকারের ‘গণহত্যার’ বিচাবেব দাবিতে এনসিপির সমাবেশে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। সমাবেশে এনসিপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ বিচার এবং সংস্কারের আগে  দেশে কোনো নির্বাচন হবে না হবে না। ‘গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আমরা টালবাহানা দেখতে পাচ্ছি, এটা লজ্জাজনক। আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। হাইকোর্ট দেখে জুলাই বিপ্লব হয়নি।’

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যে আলোচনা নিয়ে রাজনীতি সামনে আগাচ্ছে, সেটা হলো: সংস্কার, নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের বিচার। এর কোনোটিই একে অন্যের বিরোধী নয়, বরং এ তিনটির মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক রুপান্তর হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সবসময় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের বাহিরেও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা প্রয়োজন, রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা অর্জন করা। তা নাহলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের যে চেষ্টা তা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, একটি গণ অভ্যুত্থান দেশে হয়েছে, সেখানে এ দেশের জনগণ মুজিববাদ ও আওয়ামী লীগকে অস্বীকার করেছে। জনরোষে পড়ে আওয়ামিলীগের নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপরে আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না এ আলোচনা আসতে পারে না। তারা রাজনীতির নৈতিক ভিত্তি হারিয়েছে। এখন তার আইনি বন্দোবস্ত কি হবে, কোন প্রক্রিয়ায় তাদের রাজনীতি থেকে বের করবো। অতএব আওয়ামিলীগের নিবন্ধন বাতিল অতি দ্রুত করা উচিত এবং তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেছেন,আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টালবাহানা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হবে, এই সিদ্ধান্ত জনগণ গত বছরের ৫ আগস্টই দিয়েছে। এরপরও কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে জুলাই যোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করবে।সমাবেশে বক্তব্যে ‘গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আমরা টালবাহানা দেখতে পাচ্ছি, এটা লজ্জাজনক। আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। হাইকোর্ট দেখে জুলাই বিপ্লব হয়নি।’

তারিকুল ইসলাম বলেন, অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে তারা কোনো আমলাতন্ত্রিক জটিলতা দেখতে চান না। সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কারের পর নির্বাচনে যেতে হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন বলেন, খুনি হাসিনাকে আমরা বিদায় করেছি। এ বিজয় আমাদের ধরে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী বলেন, খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে এনে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলাতে হবে। এ ছাড়া মৌলিক সংস্কার ছাড়া আবারও একটি নির্বাচনের দিকে যাওয়া হলে শহিদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ বলেছেন, আমাদের রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আওয়ামী লীগ ও হাসিনার দোসররা হুমকি। এরা বাংলাদেশে থাকতে পারে না।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব হুমায়রা নূর বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর দেশের মানুষকে শোষণ করেছে। দেশের মানুষকে তারা ভোট দিতে দেয়নি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য অবশ্যই দুর্নীতিপরায়ণ, খুনি-গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। দিল্লির ‘প্রেসক্রিপশনে’ বাংলাদেশ আর চলবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে ন্যূনতম টালবাহানা করবেন না। মৌলিক সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন নয়। দলের যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসীন রিয়াজ বলেন, আগামীর রাজনীতি হবে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ থেকে ছুড়ে ফেলার রাজনীতি। যে সাংবাদিকেরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছে, তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার রাজনীতি। এনসিপির সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হতে হবে। এটাই হবে এই সরকারের অন্যতম সংস্কার।

দলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাছের খান বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলবে কি চলবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এনসিপির সংগঠক মোস্তাক আহমেদ শিশির বলেন, এ দেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে, সেই সিদ্ধান্ত জনগণ ৫ আগস্টই দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে জুলাই যোদ্ধারা তা প্রতিহত করবে। সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না। দলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। সংস্কারের আগে কোনো জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, কয়েকটি দল এনসিপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মুরু করেছে। তিনি বলেন, এনসিপির বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে, তারা শেষ হবে। এনসিপির একজন কর্মী জীবিত থাকতে বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ খালেদ সাইফুল্লাহর বাবা কামরুল হাসানও সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমার ছেলের বুকে ৭০টা গুলি করা হয়েছিল। একটা মানুষকে মারতে কত গুলি করতে হয়? হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না, স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী হাসিনা ও তার দোসরদের কোনো স্থান হবে না।

গতকালের সমাবেশের মঞ্চে আছেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। নেতাদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে ‘এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার’, ‘চব্বিশের বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দিচ্ছেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।

আ. দৈ./কাশেম

   বিষয়:  গত ৫ই    আগস্ট জনগণ   আ’ লীগ   নিষিদ্ধের   রায় দিয়েছে      বিচার   সংস্কারের আগে   দেশে নির্বাচন হবে:  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

২৪০০ আসনের বিপরীতে আবেদন ৬০ হাজারেরও বেশি
ঢাকা উত্তরের কৃষকদল নেতা রাফেলসহ কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৬৯ জন হাসপাতালে
বিশ্বব্যাংকের ২৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা অনুমোদন
সোমবার থেকে টানা ৩ দিন অতি ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

আগতাড়াইল মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপহার সামগ্রী বিতরণ
ঢাকা উত্তরের কৃষকদল নেতা রাফেলসহ কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
‘আমার বুড়ো বাপকেও তুই ছাড়িসনি’ বলে আওয়ামী লীগ নেতাকে গণধোলাই
ডিএনসিসির উত্তরায় দিয়াবাড়ি কোরবানির পশুর হাটের বর্জ্য এখনো পড়ে রয়েছে
বিমান বিধ্বস্তে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন এক যুবক
জাতীয়- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik$gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝